শহরের ধুলো, স্ক্রিনের আলো, অনিদ্রা— সব মিলিয়ে চোখের ওপর চাপ কম নয়। তাই আবার চোখে চুলকানি হলেই নির্দ্বিধায় হাত দিয়ে ঘষে নেন। বড় ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে এই অভ্যাসে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই এক অভ্যাসই কর্নিয়াকে এমনভাবে বিকৃত করতে পারে, যা পরে আর ঠিক নাও হতে পারে। আসলে অনেকেই জানেন না, জোরে জোরে চোখ কচলালে কী ঘটতে পারে।
জোরে চোখ কচলালে কী ঘটে?
মেডিসিনের চিকিৎসক সরমদ মজহার নিজের ইনস্টাগ্রামে চোখ কচলানোর খারাপ প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন সম্প্রতি।
খুব জোরে জোরে চোখ চুলকালে কর্নিয়ার ওপর চাপ পড়ে ছোট ছোট আঘাত তৈরি হয়। প্রথমে টের না পেলেও ভেতরে ভেতরে কর্নিয়া পাতলা হতে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে কর্নিয়া ধীরে ধীরে শঙ্কুর মতো আকৃতি নেয়, এই অবস্থাকে বলা হয় কেরাটোকোনাস। এতে চোখের দৃষ্টি বিকৃত হয়, সবকিছু ঢেউ খেলানো বা ঝাপসা দেখাতে পারে, আলোর দিকে তাকালেই অস্বস্তি হয়। কর্নিয়ার আকৃতি বৃত্তাকার, কিন্তু বিকৃতি ঘটতে শুরু করলে তা সূচালো হয়ে যেতে পারে।
সমস্যা এখানেই শেষ নয়। বার বার ঘষার ফলে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, সংক্রমণ হতে পারে, জ্বালা–চুলকানি হতে পারে। কেউ কেউ দীর্ঘদিন পরে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তিও হারাতে পারেন।
ঘষার সময়ে চোখের মধ্যে যে আওয়াজ হয়, সেটি হাওয়ার অবস্থান বদলের শব্দ। সেই আওয়াজটি অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু কর্নিয়ার আকার বদলাতে শুরু করলে সেটি বিপদের ইঙ্গিত। কর্নিয়া প্রতিস্থাপন ছাড়া এই রোগ নিরাময়ের আর কোনো উপায় নেই।
তা হলে কী করবেন?
চোখ চুলকালেই হাত তুলবেন না, এটিই প্রথম নিয়ম। তার বদলে চোখ বন্ধ রেখে হালকা চাপ দিন, ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন, অথবা চোখের ড্রপ দেওয়ার অভ্যাস করুন। অ্যালার্জি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর কেউ যদি নিয়মিত চোখ ঘষে ফেলেন, অজান্তে হোক বা অভ্যাসবশে, সেক্ষেত্রে দ্রুত চক্ষুরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কর্নিয়ার সমস্যা যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, চিকিৎসা তত সহজ হবে।
