লিভার আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা দেহের বিষাক্ত পদার্থ ছেঁকে ফেলা থেকে শুরু করে বিপাক প্রক্রিয়াসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। অথচ আমরা অনেকেই না জেনে প্রতিদিন এমন কিছু খাবার গ্রহণ করছি, যা ধীরে ধীরে লিভারের ভয়ানক ক্ষতি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সাধারণ খাবারই হতে পারে লিভার ক্ষয়ের নেপথ্যের প্রধান কারণ। তাই আসুন জেনে নিই যেসব খাবার নীরবে লিভারের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে-
এই ধরনের খাবারে ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকে, যা লিভারের উপর প্রচণ্ড চাপ ফেলে। এই ফ্যাট লিভারে জমে গিয়ে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা তৈরি করে, যার ফলে লিভারে প্রদাহ ও ক্ষতির আশঙ্কা বেড়ে যায়।
অত্যধিক চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার
কেক, পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিঙ্কস-এর মতো খাবার লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমিয়ে দেয় এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
ফলের রস
গ্রীষ্মকালে গরমে ঘেমেনেয়ে আসার পর অনেকখানি স্বস্তি দেয় ফলের রস। অনেকেই ভাবেন ফলের রস একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়, কিন্তু বাস্তবে এটি মূলত চিনি দিয়ে তৈরি এক ধরনের তরল যেখানে পুরো ফলে থাকা আঁশ থাকে না। ফলের রস নিয়মিত খাওয়া মানে লিভারে অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ ঢুকছে, যা লিভারে চর্বি জমা ও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এটি আস্তে আস্তে লিভারের বড় ক্ষতি করে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিড অয়েল (শিল্পজাত বীজতেল)
সয়াবিন তেল, কর্ন অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ও ক্যানোলা অয়েলের মতো বীজতেল প্রতিদিনের রান্না ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে ব্যবহৃত হয়। এসব তেলে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরে ওমেগা-৩ এর সঙ্গে ভারসাম্য নষ্ট করে। এই ভারসাম্যহীনতা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে যা লিভারসহ পুরো শরীরের বিভিন্ন রোগের মূল উৎস। এই তেল নিয়মিত খাওয়ার সঙ্গে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, বাতব্যথা এবং এমন কিছু বিপাকীয় সমস্যা জড়িত, যা শেষ পর্যন্ত লিভারে বাড়তি চাপ ফেলে।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন
এটি লিভারের সবচেয়ে বড় শত্রু। এটি লিভারের কোষ ধ্বংস করে সিরোসিস, হেপাটাইটিস এবং এমনকি লিভার ক্যানসারের কারণ হতে পারে। অধিক পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করলে লিভার ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, যার ফলে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ জমে যেতে থাকে।
লবণের অতিরিক্ত ব্যবহার
লবণের অতিরিক্ত ব্যবহারে শরীরে পানি জমে যায় এবং লিভারে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। এতে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হয় এবং গুরুতর ক্ষেত্রে লিভার ফেলিওরের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত লবণ পরিহার করা উচিত।