English

32 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

পাকস্থলীর ক্যান্সার

- Advertisements -
Advertisements

পাকস্থলীতে খাদ্য নালির মাধ্যমে খাবার এসে জমা হয়। পাকস্থলীতে আলসার বা টিউমার মারাত্মক ধরনের রোগ। এ রোগ যখন খুব ক্ষতিকর হয় না তখন তাকে বিনাইন আলসার বা টিউমার বলে, অপরদিকে আলসার বা টিউমার যখন বিপদজনক হয় এবং মৃত্যু পরোয়ানা  ডেকে আনে তখন তাকে বলা হয় ম্যালিগন্যান্ট। এই ম্যালিগন্যান্ট আলসার বা টিউমার পাকস্থলী ক্যান্সারে রূপ নেয়। আক্রমণ স্থল পাইলোরাস এবং ডিওডেনাম অঞ্চল পাকস্থলী ক্যান্সার আক্রমণের প্রধান স্থান। পাকস্থলীর মুখেও এ  রোগ দেখা যায়। পাকস্থলীর শেষ প্রান্তে ক্যান্সার হলে বেশি যন্ত্রণা হয়। পাকস্থলীর মধ্যবর্তী স্থানে ক্যান্সার হলে যন্ত্রণা কম হয়। পাইলোরাসের (Pylorus) ক্যান্সারে খাবার খাওয়ার ১ ঘণ্টা পর বমি হয়, ২য় ঘণ্টা হতে বমি হয় না।

Advertisements

পাকস্থলীর মুখের নিকট ক্যান্সার হলে খাবার খাওয়ার পর পর বমি হয়। পাকস্থলীর ক্ষতের যন্ত্রণা ছুরি বিঁধানোর মতো হয় এবং ক্যান্সারের যন্ত্রণা জ্বালাকর হয়।

ইপিগ্যাস্ট্রিকে ফোলা, টক  ঢেঁকুর, অ-ক্ষুধা এবং খাদ্য বমি ইত্যাদি দেখা দিলে, পাকস্থলীর ক্যান্সারে রোগী মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছে এরূপ বুঝতে হবে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে পেটে অল্প অল্প ব্যথা ও ক্ষুধা কমতে থাকে। ওজন কমা, শীর্ণতা, দ্রুত মাংস ক্ষয়, ডিসপেপসিয়া, ফ্যাকাসে বর্ণ, দুর্বল ও দ্রুত নাড়ির গতি সতর্কতা সূচক লক্ষণ। পরবর্তীতে আক্রান্ত স্থানে অত্যন্ত টাটানি ব্যথা, এমন কি পাকস্থলীতে হাত রাখা যায় না। প্রথমে পানির ন্যায় বমি, পরে টক বমি, থুতুর ন্যায় বমি, দুর্গন্ধ যুক্ত বমি, দ্রুত রং পরিবর্তন হয়ে মাটির বর্ণ হয়। পাকস্থলী ক্যান্সার রোগ যতই ছড়ায় ততই বমি,  হেঁচকি, রক্তবমি, রক্ত পায়খানা, ব্যথা ইত্যাদি হতে থাকে। পাকস্থলীর উপর হাত রাখলে ফোলা ভাব অনুভূত হয়, এটা নরম কিন্তু গোড়ার দিকে বেশ শক্ত বোধ হয়। আহারের ২ ঘণ্টা পর জ্বালাকর ব্যথা এবং ব্যথা  মেরুদণ্ডের দিকে ধাবিত হয়। রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে সাধারণ পেটের অসুখের  ওষুধ কোনো কাজেই আসে না।

রোগ নির্ণয় 

পাকস্থলী ক্যান্সারের রোগ-লক্ষণগুলো এতই সাধারণ  যে, খুব সহজে বুঝে উঠা কষ্টকর হয়। এর ফলে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে পাকস্থলী ক্যান্সার অনেক দূর অগ্রসর হওয়ার পর ধরা পড়ে। মাঝে মাঝে এমন হয় যে, চিকিৎসকদের কিছুই করার থাকে না, সাধারণত দেখা যায় যে পঞ্চাশ বছরের পূর্বে পাকস্থলী ক্যান্সার কম হয়। তবুও পেটের গণ্ডগোল স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু বেশিদিন স্থায়ী হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো উচিত। পাকস্থলী ক্যান্সার নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা: এন্ডোসকপি: প্রাথমিকভাবে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়েছে কিনা তা এন্ডোসকপি করে জানা যায়। এন্ডোসকপি হলো একটি নলের মতো যন্ত্র বিশেষ যা গলা দিয়ে  পেটের ভিতরে ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা হয়। বায়োপসি: ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন অংশ, কিছুটা কেটে পরীক্ষা করাকে বায়োপসি বলে। বেরিয়াম মিল এক্সরে: এ পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আলট্রাসনোগ্রাফি: করেও পাকস্থলী ক্যান্সার রোগের পরিমাণ নিরূপণ করা যায়। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমেও পাকস্থলীর রোগ নির্ণয় করা যায়।

পাকস্থলী ক্যান্সারের চিকিৎসা 

আধুনিক হোমিওপ্যাথিতে ক্যান্সার চিকিৎসা করে আরোগ্য করা সম্ভব। বিজ্ঞ ডাক্তারের অধীনে থেকে নিম্নোক্ত নিয়ম মেনে ক্যান্সারের চিকিৎসা করলে  রোগী আরোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যেমন: ১. রোগীর সঠিক রোগ নির্ণয় করতে হবে। ২. রোগীর রোগ লক্ষণ। ৩. মানসিক লক্ষণ। ৪. সার্ব-দৈহিক লক্ষণ। ৫. খাদ্যে ইচ্ছা-অনিচ্ছা সম্পর্কিত লক্ষণ। ৬. প্রস্র্রাব-পায়খানা সম্পর্কিত লক্ষণ। ৭. ঘর্ম সম্পর্কিত লক্ষণ। ৮. আবহাওয়া সম্পর্কিত লক্ষণ। ৯. কাতরতা সম্পর্কিত লক্ষণ। ১০. নিদ্রা ও স্বপ্ন-দেখা সম্পর্কিত লক্ষণ। ১১. জননেন্দ্রিয় সম্পর্কিত লক্ষণ, ইত্যাদি সহ সকল লক্ষণ পূর্ণাঙ্গ রূপে গ্রহণ করতে হবে এবং গ্রহণ করা লক্ষণগুলো থেকে সর্বাধিক লক্ষণ সারাতে পারে এমন ওষুধের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। ১২. রোগীর অতীত রোগ ও বংশগত রোগ বিবেচনায় নিতে হবে। ১৩. রোগীর মায়াজমেটিক  স্টেট সমূহ নির্ধারণ করতে হবে এবং বর্তমানে কোনো মায়া-জম প্রাধান্য তা বিবেচনায় নিতে হবে। ১৪. উপরে উল্লিখিত সকল বিষয় মনোযোগ সহ বিশ্লেষণ করে একটি মাত্র ওষুধ নির্বাচন করতে হবে। ১৫. এরপর ওষুধ প্রয়োগ বিধি মতো রোগীকে ওষুধ দিতে হবে। দ্বিতীয় নির্বাচন সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে।

পাকস্থলীর ক্যান্সারের কতিপয় লক্ষণ উপরে উল্লিখিত “পাকস্থলী ক্যান্সারের চিকিৎসা” শিরনামের ২ নম্বরে উল্লিখিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় “রোগীর রোগ লক্ষণ” নিম্নে দেয়া হলো। যারা উল্লিখিত ১৫টি বিষয় সমন্বয় করে চিকিৎসা করার যুগ্যতা রাখেন না, তাদের চিকিৎসায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তাই নিম্নে উল্লিখিত প্রায় লক্ষণ সমূহের সঙ্গে ওষুধের নাম দেয়া হয়নি। পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়ে হিক্কা হলে হোমিওপ্যাথিতে (১) টি ওষুধ রয়েছে এবং তা থেকে ১ টি প্রয়োগ হতে পারে। পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়ে বমি হলে (৬) টি ওষুধ অনুরূপভাবে পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়ে রক্ত বমি  (১) পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার কারণে খাবার খেতে পারে না  (১) এলমোনিয়াম বিষাক্ততার কারণে পাকস্থলীর ক্যান্সার (১) পাইলোরাস ক্যান্সার (৬) ক্যান্সার হওয়ার কারণে পাকস্থলীতে ব্যথা (১) পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার কারণে কফির মতো বমি (১) কালো রঙের রক্ত বমি (২) নীল রঙের রক্ত বমি (১) পানি পান করার পরে রক্ত বমি (১) খাবার খাওয়ার পরে রক্ত বমি (১) পরিশ্রম করার পরে রক্ত বমি  (১) রক্ত বমি করা শুয়ে থাকলে বৃদ্ধি  (১) রক্ত বমি করে চিত হয়ে শুলে  (১) নড়াচড়া করলে রক্ত বমি হয় (১) এভাবে প্রয়োজনীয় সকল লক্ষণ দেখে রোগীকে চিকিৎসা দিতে হবে।

লেখক: ক্যান্সার চিকিৎসক ও চিফ কনসালট্যান্ট, সরদার হোমিও হল, ৬১/সি আসাদ এভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন