বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের তান্ডব চলছে প্রায় বছর দেড়েক ধরে। পুরো বিশ্বকে নিয়ে খেলছে এই ভাইরাসটি। বিশ্ব নিয়ন্ত্রণকারী দেশগুলির ঘুম হারাম করে দিয়েছে এটি।প্রাণান্ত চেষ্টা করেও ভাইরাসটির গতি থামাতে পারছে না কেউ। দু’একটি দেশ সংক্রমণের হার কমাতে পারলেও পুরো বিশ্ব ভাইরাসটির কাছে নাস্তানাবুদ হচ্ছে। দ্রুত টিকা আবিষ্কার হলেও তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ এখনো কমেনি বিজ্ঞানীদের কপালের। কারন নিত্যনতুন রুপে এটি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
গত ৭দিনের চিত্রটা যদি দেখি তাহলে দেখা যায় প্রতিবেশী দেশ ভারতে ভাইরাসটির তান্ডবলীলা চলেছে সবচেয়ে বেশী। প্রতিদিনই এখানে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী আজ ২৪ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত গত ৭ দিনে বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ লাখ ৮ হাজার ৮৮৪ জন। মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ৮৬ হাজার ৯৯৬ জন মানুষের।
আক্রান্তের সংখ্যায় প্রতিবেশী দেশ ভারত এর অবস্থান শীর্ষে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২০ লাখ ৮০ হাজার ৭৭৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৮৭৬ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৯০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৭ হাজার ২০৬ জনের।
করোনা আক্রান্তে বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র গত ৭ দিনের হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ৭দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৫৭ জনের। পূর্ববতী ৭দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ৫ লাখ ১৩৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫ হাজার ১৮১ জনের।
ব্রাজিল গত ৭দিনের হিসেবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৬৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজার ৫৯৯ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৯২৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২০ হাজার ৯০ জনের।
তুরস্ক গত ৭দিনের হিসেবে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। গত ৭দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪ লাখ ৭৮১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৩৫২ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ৪ লাখ ৪ হাজার ৩৮২ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৮৬৬ জনের।
ফ্রান্স গত ৭দিনের হিসেবে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৬২৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৯২ জনের। পূর্ববতী ৭দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ২ লাখ ৪৩ হাজার ৮২০ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২ হাজার ৯ জনের।
আর্জেন্টিনা গত ৭ দিনের হিসেবে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৯২ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৭৩৪ জনের।
ইরান গত ৭দিনের হিসেবে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৭৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭২১ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৯৬৯ জনের।
জার্মানি গত ৭দিনের হিসেবে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৪৯ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৪০ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৬৯৮ জনের।
কলোম্বিয়া গত ৭ দিনের হিসেবে নবম অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ১২২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮৮২ জনের। পূর্ববতী ৭দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ২১৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২ হাজার ২৮১ জনের।
ইতালি গত ৭ দিনের হিসেবে দশম অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৯৩ হাজার ৬৩০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৩৩৩ জনের। পূর্ববতী ৭দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫৬৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২ হাজার ৭৮৭ জনের।
বাংলাদেশ গত ৭দিনের হিসেবে পঁচিশতম অবস্থানে রয়েছে। গত ৭ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২৭ হাজার ৯২৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬৮৭ জনের। পূর্ববতী ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছিল ৩৮ হাজার ১৮৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৯৮ জনের।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গেব্রিয়েসুস বলেছেন, ‘বিশ্বে এখন পর্যন্ত টিকার ৯০ কোটি ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে এর ৮১ শতাংশ ডোজ দেয়া হয়েছে ধনী ও উন্নত দেশগুলোকে। দরিদ্র দেশগুলো পেয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ ডোজ।’
বিশ্বব্যাপী টিকা বণ্টনে এমন বৈষম্যের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। ধনী দেশে জমা পড়ে থাকা টিকার অতিরিক্ত ডোজ নিম্ন আয়ের দেশের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিতদের শরীরে প্রয়োগের আহ্বান জানান তিনি।