English

25.9 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ৩০, ২০২৫
- Advertisement -

রক্তদানের আগে ও পরে যে বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি

- Advertisements -

হঠাৎ করেই যে কোনো সময় মানুষের জীবনে হতে পারে রক্তের প্রয়োজন। আর রক্তদান হচ্ছে একটি মহৎ কাজ, যা একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে আপনার এক রক্ত দিয়ে। অনেক সময় দুর্ঘটনায় কিংবা বড় অপারেশনে প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে আগুনে পোড়ার মতো গুরুতর রোগীর ক্ষেত্রে।

আর একজন সুস্থ ব্যক্তি প্রতি চার মাস অন্তর রক্ত দিতে পারেন। নারীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ছয় মাস পরপর রক্ত দেওয়া যায়। জরুরি প্রয়োজন কিংবা যে কোনো সময় রক্তদান করতে পারেন যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ।

তবে নিজেকে সুস্থ মনে হলে আপনিও রক্তদানের আগে ও পরে বেশ কয়েকটি বিষয় জেনে তারপর রক্ত দিতে পারেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন হেল্থ এইড হাসপাতালের ডা. আফিফ বাসার।

সড়ক দুর্ঘটনা, আগুনে পোড়া কিংবা যে কোনো গুরুতর আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে রোগীর রক্তের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন জটিল অস্ত্রোপচারের সময়, যেমন— হার্ট সার্জারি, ক্যানসারের অপারেশন, যা রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায়। এ সময়ে রোগীর জন্য আগে থেকেই রক্ত সংরক্ষণ করে রাখা প্রয়োজন।

এ ছাড়া থ্যালাসেমিয়া, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া বা অন্যান্য রক্তরোগে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। আর ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির কারণে রক্তকণিকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে রোগীর প্রয়োজন পড়ে রক্তের। পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর রক্ত প্রয়োজন কিনা অনেক সময়ে তা নির্ণয় করেন চিকিৎসকরা। আবার প্রসবকালীন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে মায়ের জীবন বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজন হয়।

রক্তদানের আগে যা করা উচিত

উপরোক্ত বিষয়ে রক্তের প্রয়োজনে আপনিও মানবিক কারণে এগিয়ে আসতে পারেন। একজন মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রক্তদানের আগে আপনার কিছু করণীয় রয়েছে। রক্তদান একটি সহজ প্রক্রিয়া হলেও এর আগে কিছু প্রস্তুতি ও সতর্কতা মেনে চলা উচিত।

এই যেমন রক্ত দেওয়ার আগের রাতে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। কারণ ঘুমের কমতি শরীরে প্রভাব ফেলে। রক্ত দেওয়ার এক থেকে চার ঘণ্টা আগে পুষ্টিকর ও আয়রন বা লৌহ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। খালি পেটে রক্তদান করলে দুর্বলতা বা মাথা ঘোরার ঝুঁকি থাকে। আর কমপক্ষে ৫০০ মি.লি. বা দুই গ্লাস পানি পান করতে হবে। এটি রক্তদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে জ্বর, সর্দি-কাশি বা অন্য কোনো অসুস্থতা আছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে রক্তদান করা ঠিক নয়।

আবার ওষুধের বিষয়ে সতর্কতা

আপনি যদি কোনো অ্যান্টিবায়োটিক, ইনসুলিন বা অ্যাসপিরিনের মতো ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন, তবে রক্তদানের আগে অবশ্যই চিকিৎসককে জানাতে হবে এবং তার পরামর্শ নিতে হবে। কারণ কিছু ওষুধ রক্তদানের জন্য ব্যক্তিকে অযোগ্য করে তুলতে পারে।

এ ছাড়া রক্তদানের অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে মদপান এবং দু-চার ঘণ্টা আগে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি রক্তদানের জন্য ঠিক নয়। রক্তদাতার বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ওজন ন্যূনতম ৪৫ কেজি বা ১০০ পাউন্ড হতে হবে।

রক্তদানের পর যা করা উচিত

রক্তদানের পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। রক্ত দেওয়ার পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করুন। ফলের রস, ডাবের পানি, লেবুর শরবত কিংবা স্যুপ খেলে খুবই ভালো হয়।  এতে রক্তের প্লাজমা দ্রুত পূরণ হবে, যা নিজের শরীরের জন্য ভালো। শরীরকে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য এ বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত। আর সেই সঙ্গে বিশ্রাম একান্ত প্রয়োজন। রক্তদানের পর কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিশ্রাম নিতে হবে।

ভালো হয় যেখানে রক্ত দিয়েছেন সেখানেই বিশ্রাম নিলে। রক্ত দিয়ে তাড়াহুড়া করে উঠে যাওয়া যাবে না। ভারি কাজ পরিহার করতে হবে। কারণ ভারি জিনিস তোলা, ব্যায়াম করা কিংবা অন্য কোনো কঠোর শারীরিক কসরত থেকে বিরত থাকতে হবে। রক্ত দিলে শরীরে দুর্বলতা আসতে পারে। তাই বিশ্রাম নিলে শরীর আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

এ ছাড়া চা ও কফি থেকে বিরত থাকতে হবে। রক্তদানের পর দুই-তিন ঘণ্টা চা-কফি পান করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। কারণ এগুলো আয়রন বা লৌহ শোষণে বাধা দিতে পারে। আর চা ও কফিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে, যা রক্তদানের পর গ্রহণ ঠিক নয়।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/it68
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন