English

34 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
- Advertisement -

গলার স্বর বসে গেলে কী করবেন?

- Advertisements -

গলার স্বরের পরিবর্তন বা গলা বসে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে প্রায় রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। বিশেষ করে শীতকালে এ সমস্যা অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। আমাদের স্বরযন্ত্রের গঠন প্রকৃতি আর কার্য প্রণালি বেশ জটিল। ল্যারিংস বা স্বরযন্ত্রের মাঝ বরাবর থাকে ভোকাল কর্ড, যার আবার দুটি অংশ আছে, সে ভোকাল কর্ডের সমন্বিত নাড়াচাড়া এবং সে সঙ্গে জিহ্বা, মুখের মাংসপেশি, খাদ্যনালির অংশ বিশেষসহ আরও অনেক অঙ্গ-প্রতঙ্গের সহযোগিতায় আমরা কথা বলার কাজটি করি।

Advertisements

এর মধ্যে ল্যারিংস আর ভোকাল কর্ডের গুরুত্বই সবচেয়ে বেশি। অনেক উঁচু গলায় কথা বললে গলার স্বর ভেঙে যেতে পারে, আবার ঠান্ডায়ও গলার স্বর পরিবর্তন হয়। তাই, এ শীতে স্বরযন্ত্রের প্রদাহ বা ল্যারিনজাইটিসের কারণেই গলার স্বর বসে যাওয়ার সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সঙ্গে কফ, ঠান্ডা বা গলাব্যথা থাকতে পারে। ল্যারিনজাইটিস হলে অবশ্য ভয়ের কারণ নেই খুব একটা, এর প্রধান চিকিৎসাই হচ্ছে কথা না বলা, যার ফলে স্বরযন্ত্র বিশ্রাম পায় এবং তাড়াতাড়ি আরাম পাওয়া যায়। ঠান্ডা, ধুলাবালি এড়িয়ে চলা, হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা, আদা, লবঙ্গ ইত্যাদি খেলেও কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে আসে।

এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে এন্টিহিস্টামিন বা এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের প্রয়োজনও হতে পারে। যারা পেশাগত বা ব্যক্তিগত কারণে কথা বেশি বলেন যেমন, শিক্ষক, চিকিৎসক, গায়ক, ক্যানভাসার, এদের ক্ষেত্রেও গলার স্বরের সমস্যা দেখা দিতে পারে, ক্রমাগত কথা বলার কারণে স্বরযন্ত্রে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হয়, যাকে বলা হয় ক্রনিক ল্যারিনজাইটিস। কখনো কখনো ভোকাল কর্ডে পলিপ, নডিউল বা টিউমার হতে পারে, এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো ব্যথা বা অসুবিধা থাকে না, শুধু গলার স্বর বসে যায়, যা সময়ের সঙ্গে বেড়ে যেতে পারে, সঙ্গে শ্বাসকষ্টও হতে পারে।

Advertisements

আবার মারাত্মক কিছু কারণেও হতে পারে গলার স্বরের পরিবর্তন। বিশেষ করে স্বরযন্ত্র বা শ্বাসনালির ক্যানসারজাতীয় সমস্যা হলেও গলার স্বর বসে যায়, তাই কারও ক্ষেত্রে যদি গলার স্বরের সমস্যা চার থেকে ছয় সপ্তাহের বেশি হয়ে যায়, সঙ্গে কাশি, কফ বা গলা দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা থাকে, ওজন কমার লক্ষণ দেখা দেয়, শ্বাসকষ্ট থাকে বা ধূমপানের ইতিহাস থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। আরও কিছু কারণেও গলার স্বরের পরিবর্তন হতে পারে। যেমন, থাইরয়েড হরমোনের অভাবে বা হাইপোথাইরয়েডিজম রোগে গলার স্বর ফ্যাসফ্যাসে হতে পারে, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা থাকলেও গলার স্বর পরিবর্তন হতে পারে।

কিছু ক্ষেত্রে ভোকাল কর্ডের যে নার্ভ রয়েছে, রিকারেন্ট ল্যারিঞ্জিয়াল নার্ভ নামে, সে নার্ভ বিকল হলেও গলার স্বর একদম বসে যেতে পারে বা পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। গলা ভেঙে যাওয়ার সমস্যাকে আমরা অধিকাংশ সময় খুব একটা পাত্তা দেই না, কিন্তু এর পেছনে মারাত্মক কোনো কারণ থাকাও অসম্ভব নয়। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারণ উদ্ঘাটন করে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। আবার স্বরযন্ত্রের যত্ন নেওয়াও দরকার, উঁচু গলায় কথা কম বলা, ধূমপান বা মদ্যপান না করা, পান-সুপারি বা জর্দা কম খাওয়া, অতিরিক্ত গরম বা ঝাল খাবার না খাওয়া এবং এখন শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ঠান্ডা বা ধুলাবালি থেকে বাঁচতে, কোভিড ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই, মাস্ক ব্যবহার করা জরুরি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন