বর্ষাকাল গরমের তীব্রতা থেকে মুক্তি দেয়, নিয়ে আসে স্বস্তি। এ সময় বাঙালির মন উড়ু উড়ু করে। বৃষ্টি পড়লেই ভাজাপোড়া খেতে ইচ্ছা করে। মুখরোচক সব খাবার যেন বৃষ্টি দিনের উৎকৃষ্ট সঙ্গী। কিন্তু এসময় খাবার খেতে হবে বুঝেশুনে। কেননা বর্ষায় খাবার ও পানি থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বেশি থাকে। এছাড়া এ সময় পেট খারাপের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই আসুন জেনে নিই বর্ষাকালে পেট খারাপের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব খাবার-
সামুদ্রিক খাবার
বর্ষায় কিছু মাছ ও চিংড়ির মতো সামুদ্রিক খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এর দুটি প্রধান কারণ হলো- বর্ষাকালে পানিতে রোগজীবাণু ও ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মাছকে সংক্রামিত করতে পারে। এছাড়া এই প্রজনন ঋতুতে সামুদ্রিক খাবারে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে, যা খেলে পেটের ক্ষতি হতে পারে।
মিষ্টি
পেটের সমস্যা থাকলে বর্ষায় মিষ্টি খাবার একটু কম খান। বিশেষ করে ভাজা মিষ্টি মানে জিলিপির খাবার খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া অতিরিক্ত চিনি শরীরের জন্য একেবারে ভালো নয়। তাই যত মিষ্টি এড়িয়ে চলবেন তত ভালো।
পাতাযুক্ত সবুজ শাক-সবজি
যদিও পালং শাক, লেটুস এবং বাঁধাকপির মতো শাক-সবজি সাধারণত স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়, তবে বর্ষা মৌসুমে এগুলো সমস্যার কারণ হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে এবং আর্দ্র অবস্থা এই সবজিতে ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগজীবাণুর জন্য একটি আদর্শ প্রজনন স্থল। ভেজা অবস্থার কারণে পাতাযুক্ত শাক সহজেই ময়লা, জীবাণু এবং পোকার ডিম দ্বারা দূষিত হতে পারে। এগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করা কঠিন, ফলে পেটের সংক্রমণ এবং ডায়রিয়ার মতো খাদ্যজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
চা-কফি কম খান
অনেকেই বৃষ্টির দিনে ঘন ঘন চা-কফি খেতে ভালোবাসেন। এটা ঠিক নয়। কারণ এই আবহাওয়ায় যত বেশি চা-কফি খাবেন, পেটের সমস্যা তত বাড়বে।
মাশরুম
মাশরুম মূলত স্যাঁতসেঁতে মাটিতে জন্মায়। ফলে এতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যদিও মাশরুম রান্নায় ব্যবহারের আগে ভালো করে প্রক্রিয়াজাত করে নেওয়া হয়, তবুও সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাই বর্ষায় মাশরুম না খাওয়াই ভালো।
দুগ্ধজাত খাবার
পুষ্টিবিদদের মতে, দুধে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা শরীরে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজের ঘাটতি মেটায়। কিন্তু বর্ষায় দুগ্ধজাত খাবার খেলে পেট খারাপের ঝুঁকি বাড়ে। কারণ দুধে থাকা ল্যাক্টোজ সহজে হজম হতে চায় না।
বাইরের খোলা খাবার
রাস্তার ধারের খাবার প্রস্তুত এবং পরিবেশন করা হয় খোলা পরিবেশে। এ ধরনের খাবার বৃষ্টির পানি এবং মাছির মাধ্যমে দূষিত হতে পারে। রাস্তার খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত পানি বিশুদ্ধ নাও হতে পারে, যা কলেরা এবং টাইফয়েডের মতো জলবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। রাস্তার খাবার খাওয়ার পরিবর্তে, পরিষ্কার, তাজা উপাদান এবং নিরাপদ রান্নার অভ্যাস ব্যবহার করে বাড়িতে একই ধরনের স্ন্যাকস তৈরি করুন।