নিজেদের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের মুখপাত্র আবু ওবায়দার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। সোমবার বিকেলে এক টেলিভিশন ভাষণে গোষ্ঠীটির নতুন মুখপাত্র এই ঘোষণা দেন।
প্রচারিত সেই ভিডিও বার্তায় জানানো হয়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। তবে নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে এই হামলা ঠিক কোথায় বা কখন চালানো হয়েছিল, সে সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
ভাষণ চলাকালীন প্রথমবারের মতো আবু ওবায়দার আসল নাম প্রকাশ করে কাসাম ব্রিগেড। নতুন মুখপাত্র জানান, প্রয়াত নেতার প্রকৃত নাম ছিল হুজাইফা সামির আল-কাহলুত। দীর্ঘ দুই দশক ধরে তিনি হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সবসময়ই তার মুখমন্ডল আবৃত থাকত। নতুন মুখপাত্রের পরিচয় গোপন রেখে জানানো হয়, তিনি এখন থেকে ‘আবু ওবায়দা’ নামেই সম্বোধন লাভ করবেন এবং পূর্বসূরির রেখে যাওয়া দায়িত্ব পালন করবেন।
গত ৩১ আগস্ট ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছিল, গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলে এক বিমান হামলায় আবু ওবায়দা নিহত হয়েছেন। হামাসের এই বিবৃতির মাধ্যমে সেই খবরের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলল। ভাষণে আবু ওবায়দার পাশাপাশি হামাসের আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতার মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন গাজায় হামাসের নেতা মোহাম্মদ সিনওয়ার, রাফাহ ব্রিগেডের সাবেক কমান্ডার মুহাম্মদ শাবানা ওরফে আবু আনাস এবং কাসাম ব্রিগেডের যুদ্ধ ও প্রশাসনিক সহায়তা বিভাগের প্রধান হাকেম আল-ঈসা।
নতুন মুখপাত্র তার বক্তব্যে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’-এর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের নিপীড়ন এবং আল-আকসা মসজিদের অবমাননার বিরুদ্ধে এটি ছিল এক শক্তিশালী জবাব।
শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুতে হামাসের সাংগঠনিক কাঠামো বা লড়াইয়ের মানসিকতা ভেঙে পড়বে না উল্লেখ করে তিনি জানান, দখলদারিত্ব বজায় থাকা পর্যন্ত তারা অস্ত্র ত্যাগ করবেন না এবং প্রয়োজনে নখ দিয়ে হলেও লড়াই চালিয়ে যাবেন। এছাড়া গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিন সমর্থকদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
