তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির বিশাল সামরিক অবরোধ ও ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ মহড়াকে কেন্দ্র করে এশিয়ায় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বেইজিংয়ের এই নজিরবিহীন লাইভ ফায়ারিং, সমুদ্র ও আকাশপথ অবরোধের কঠোর জবাব দেয়ার দাবি করেছে তাইপে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ করেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে, তাদের অত্যাধুনিক এফ-সিক্সটিন ভাইপার যুদ্ধবিমান অত্যন্ত গোপনে চীনের শক্তিশালী জে-সিক্সটিন যুদ্ধবিমানের গতিবিধি অনুসরণ করছে এবং সেটিকে নিশানায় পরিণত করেছে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তাইওয়ানের যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত এএন-এএকিউ-৩৩ স্নাইপার অ্যাডভান্সড ক্যালিব্রেশন পড। এটি একটি প্যাসিভ সেন্সর যা কোনো সিগন্যাল ছাড়াই কাজ করে। ফলে চীনা পাইলটরা সম্ভবত বুঝতেই পারেননি যে তারা তাইওয়ানের গোলার আওতায় চলে এসেছেন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো রাডার সংকেত ছাড়াই ১৮৭ কিলোমিটার দূর থেকে শত্রুপক্ষকে শনাক্ত করা সম্ভব, যা যেকোনো প্রকৃত যুদ্ধে তাইওয়ানকে নীরবে শত্রু দমনের বিশাল সুবিধা দেবে।
চীনের এই মহড়া এমন এক সময়ে শুরু হয়েছে যখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানাই তাকাইচি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে তাইওয়ান অবরোধ করা হলে জাপান সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। অন্যদিকে চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১১ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন পেয়েছে তাইওয়ান।
বিশ্লেষকদের মতে, চীন বর্তমানে তাদের জে-টোয়েন্টি এবং জে-থার্টি ফাইভ-এর মতো পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার দিয়ে তাইওয়ানকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে। তবে তাইওয়ানের নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী এই ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে বেইজিংকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে তারা সংখ্যায় কম হলেও যেকোনো চীনা আগ্রাসন রুখে দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। চীনের এই সামরিক মহড়া ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের বিপরীতে তাইওয়ানের এই রণকৌশল বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
