English

27 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১০, ২০২৫
- Advertisement -

নথি ফাঁসে বের হলো দুবাইয়ে ধনীদের গোপন সম্পদের পাহাড়

- Advertisements -
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গোপনে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। আকাশচুম্বী অট্টালিকার এ শহরে তাঁদের একেকজনের লাখ লাখ ডলার মূল্যের সম্পদের মালিকানা। বৈশ্বিক একটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্পের ফাঁস হওয়া তালিকায় ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি, অর্থপাচারকারী ও অপরাধীদের নাম উঠে এসেছে।
Advertisements

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার ‘দুবাই আনলকড’ নামের ওই নথি প্রকাশ করা হয়।

এতে ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির মতো ব্যবসায়ীর সম্পদের হিসাবও রয়েছে। অনুসন্ধানী এই সাংবাদিকতা প্রকল্পের সমন্বয় করেছে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোর। এতে অংশ নিয়েছে ৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যম। প্রতিবেদনটি ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। 

দুবাইয়ের ভূমি দপ্তরসহ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফাঁস হওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। এতে বিশেষ করে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল নাগাদ দুবাইয়ে এসব ব্যক্তির মালিকানায় থাকা ও ব্যবহার করা সম্পদের বিস্তারিত চিত্র উঠে আসে।

ফাঁস হওয়া তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ (সিফোরএডিএস)।

প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ও সংঘাত নিয়ে গবেষণা করে থাকে। পরে এসব তথ্য-উপাত্ত ই-টোয়েন্টিফোর এবং ওসিসিআরপির সঙ্গে ভাগাভাগি করে প্রতিষ্ঠানটি। এ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসও। ফোর্বস ২২ ধনকুবের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ৬০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের ৭৬টি সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে।
বিশ্বের চারটি মহাদেশের ১০টি দেশ থেকে এসেছেন তারা।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে ১০ ধনকুবেরের নাম, তাদের নিট সম্পদ ও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
ফোর্বসের প্রতিবেদনের শুরুতেই রয়েছে ভারতীয় নাগরিক মুকেশ আম্বানির নাম। তার নিট সম্পদ ১১ হাজার ২০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস হিসেবে ‘বিভিন্ন খাত’ উল্লেখ করা হয়েছে। দুবাইয়ের পাম জুমেইরাহ কৃত্রিম দ্বীপে তাঁর আনুমানিক ২৪ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে।
তালিকায় আরো আছেন  ওমানের নাগরিত সুহাইল বাহওয়ান। তিনি ১৯০ কোটি ডলার সম্পদের মালিক। আরো আছেন রাশিয়ার নাগরিক আন্দ্রেই মোলচানভ ও তার পরিবার, সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস ‘নির্মাণসামগ্রী’। পাম জুমেইরাহ এলাকায় তাঁদের ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের সম্পদ রয়েছে।

ভারতীয় নাগরিক এম এ ইউসুফ আলীর পরিবারের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৭৮০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস ‘বিভিন্ন খাত’।

পাম জুমেইরাহ, দুবাই মেরিনা ও ইন্টারন্যাশনাল সিটিতে তাঁদের সাত কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ রয়েছে। এ ছাড়া আরেক ভারতীয় শামশির ভায়ালিলের সম্পদ ৩৫০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস ‘স্বাস্থ্যসেবা’ খাত। দুবাই হিলস ও দুবাই প্রডাকশন সিটিতে তিনি ছয় কোটি ৮০ লাখ ডলারের সম্পদের মালিক।

আরেক ভারতীয় শামশির ভায়ালিলের সম্পদ ৩৫০ কোটি ডলারের। সম্পদের উৎস ‘স্বাস্থ্যসেবা’ খাত। দুবাই হিলস ও দুবাই প্রডাকশন সিটিতে তিনি ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারের সম্পদের মালিক।

সুহাইল বাহওয়ান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের নাগরিক। ১৯০ কোটি ডলার সম্পদের মালিক সুহাইল বাহওয়ান। সম্পদের উৎস ‘বিভিন্ন খাত’। জুমেইরাহ বে আইল্যান্ড, মেদান ও ডাউনটাউন দুবাইয়ে তাঁর সাড়ে ৪ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে। রাশিয়ার নাগরিক আন্দ্রেই মোলচানভ ও তার পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস ‘নির্মাণসামগ্রী’। পাম জুমেইরাহ এলাকায় তাঁদের ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের সম্পদ রয়েছে।

বিনোদ আদানি  সাইপ্রাসের নাগরিক। ২ হাজার ২২০ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক এই বিনোদ আদানি। তার সম্পদের উৎস দেখানো হয়েছে ‘অবকাঠামো ও পণ্যদ্রব্য’। এমিরেটস হিল, জুমেইরাহ লেক টাওয়ারস, জুমেইরাহ পার্ক, ডাউনটাউন দুবাই, দুবাই মেরিনা, ইন্টারন্যাশনাল সিটি ও দুবাই সিলিকন ওয়েসিসে তাঁর ২ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে। অবশ্য ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে বিনোদ আদানিকে ভারতীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মিশরের নাগরিক নগিব সাবিরিস। নগিব সাবিরিস ও তার পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ৩৮০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস ‘টেলিকম’ খাত। পাম জুমেইরাহ এলাকায় তাঁদের ১ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে। কানাডার নাগরিক চ্যাংপেং ঝাও ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক। সম্পদের উৎস ‘ক্রিপ্টো মুদ্রা বিনিময়’। ডাউনটাউন দুবাইয়ে তাঁর ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সম্পদ রয়েছে।

সকেট বর্মন যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তার সম্পদের পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার। সম্পদের উৎস ‘ভোগ্যপণ্য’। দুবাইয়ের পাম জুমেইরাহ দ্বীপে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সম্পদ রয়েছে সকেট বর্মনের। এ ছাড়া রয়েছেন, সাইপ্রাসের নাগরিক ইগর মাকারভ। তিনি ২১০ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক। সম্পদের উৎস ‘বিনিয়োগ’। পাম জুমেইরাহ এলাকায় তিনি ১ কোটি ১০ লাখ ডলারের সম্পদের মালিক।

দারিদ্র্যপীড়িত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের অন্তত সাত নাগরিকের নামও আছে এ তালিকায়। তাদের মধ্যে ছয়জনকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও একজনকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও তালিকায় চীন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকদের পাশাপাশি ইয়েমেন, নাইজেরিয়া ও কেনিয়ার মতো দেশের নাগরিকদের নামও রয়েছে। রয়েছে নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা মিয়ানমারের একজন অস্ত্র ব্যবসায়ীর নামও।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন এ তালিকায়। পাকিস্তানের পত্রিকা ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী দুবাইয়ে ১৭ হাজার পাকিস্তানি সম্পদের মালিক। তবে তথ্য-উপাত্ত ও অতিরিক্ত সূত্র ব্যবহার করে এ সংখ্যা ২২ হাজারের মতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। ওই তালিকায় নাম রয়েছে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, বাখতাওয়ার ভুট্টো জারদারি ও আসিফা ভুট্টো জারদারি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভির স্ত্রী মিসেস আশরাফ,সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলে হুসাইন নওয়াজ এবং আলোচিত সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ছেলে সাদ সিদ্দিক বাজওয়ারের।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/xuhr
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন