স্বদেশে বড় বিড়ম্বনায় পড়েছে বাংলা ভাষাভাষী ভারতের নাগরিকেরা। ‘বাংলাদেশি’ অভিযোগে প্রায়ই হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। কাউকে মারধরও করা হচ্ছে। বুধবার রাতে তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে বাংলা অধ্যুষিত কলকাতায়। বাংলাতে কথা বলায় বেধড়ক মার খেয়েছেন দুই ভারতীয় যুবক। ঘটনা গড়িয়েছে আরও বহুদূর।
ভারতের একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, কলকাতার শিয়ালদা ব্রিজের কাছেই দুজন যুবককে হেনস্থা করেন হিন্দিতে কথা বলা এক দোকানদার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন ওই দুই যুবক। ঘটনার পর তারা পুলিশেও অভিযোগ দিয়েছে। খোদ কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন রাজ্যটির জনগণ। ক্ষোভ ঝেড়েছেন রাজনৈতিক নেতারাও।
জানা গেছে, বুধবার রাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র শিয়ালদাহর কাছে মোবাইলে সরঞ্জামের দোকানে যান। সেখানে দর কষাকষির এক পর্যায়ে চড়াও হন ওই দোকানদার। এসময় তার সঙ্গে থাকা একজনকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারী দোকানদার ও তার সঙ্গীরা হিন্দিভাষী বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্র।
মারধরের শিকার ওই ছাত্র বলেন, ‘হিন্দিতে বলছে বাংলাদেশি বলব। কী করবি বল? কী করার আছে কর। এরপর আমায় মারল। আমার মোবাইল কেড়ে নিল। আমাদের একটা ছেলেকে আটকেও রেখেছিল।’ অন্য যুবক বলেন, ‘আমাদের হোস্টেলের কিছু ছেলে মোবাইলের কভার কিনতে যায়। তখন একটা লোক আমাদের বাংলাদেশি বলে আখ্যা দেয়। তার জন্য আমরা প্রতিবাদ করি। সেই কারণে, ছুরি-বন্দুক দিয়ে আঘাত করে আমাদের।’
ওই ঘটনায় পরে কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আহত হন। তাদের মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করানো হয়েছে। স্থানীয় থানায় অভিযোগের পর পুলিশও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে। তবে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
রাজ্যটির বাংলাপক্ষের নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গুজরাটে মার খাব, রাজস্থানে মার খাব, এখন কলকাতাতেও মার খাব? মানলাম উড়িশায় বিজেপি সরকার, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকার আছে। কলকাতায় তো বিজেপি নেই। তাহলে এই অপরাধীগুলো কেন গ্রেফতার হবে না?’
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষও, ‘শিয়ালদহ মানে গেটওয়ে অফ কলকাতা। যদি সেখানেই এমন বাংলাদেশি বলে…সবটাই তদন্ত করে দেখতে হবে।’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘এটা ধিক্কার জানিয়ে শেষ হচ্ছে না। আগে তো ভিন রাজ্যে হত। এখন এখানে হচ্ছে। এই পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আর এটা করছেন দিল্লিওয়ালারা।’