ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে তার বাসভবন থেকে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে ফেডারেল পুলিশ। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘পালানোর চেষ্টা’ রুখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ নিজ উদ্যোগে প্রিভেন্টিভ বা আগাম আটক পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করে এবং সুপ্রিম কোর্ট তা অনুমোদন করে।
সমর্থকদের সমাবেশে পালানোর আশঙ্কা
বলসোনারোর বড় ছেলে সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো তার বাবার বাসস্থানের সামনে সমর্থকদের নিয়ে এক ‘জাগরণ কর্মসূচির’ আহ্বান করেন। আদালতের মতে, এই সমাবেশ বড় আকার ধারণ করতে পারে এবং এতে সৃষ্টি হওয়া বিশৃঙ্খলার সুযোগে বলসোনারো পালানোর চেষ্টা করতে পারেন- এমন তথ্য তারা পেয়েছেন।
আদালত জানায়, শনিবার ভোরে তার ইলেকট্রনিক মনিটরিং ডিভাইসেও বিঘ্ন ঘটার খবর পাওয়া গেছে। আদালতের ভাষ্য, এটি তার ‘পালানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত’।
তবে ফ্লাভিও বলসোনারো এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।
অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের দায়ে ২৭ বছরের কারাদণ্ড
সামরিক অভ্যুত্থান পরিকল্পনার দায়ে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পাঁচ বিচারপতির এক প্যানেল তাকে দোষী সাব্যস্ত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই সাজা ঘোষণা করে।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের নির্বাচনে বামপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে পরাজিত হওয়ার পরও ক্ষমতায় টিকে থাকতে ষড়যন্ত্র পরিকল্পনার নেতৃত্ব দেন বলসোনারো। পাঁচজন বিচারপতির মধ্যে চারজন তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন আর একজন খালাসের পক্ষে ভোট দেন। বলসোনারোর আইনজীবীরা এই সাজাকে ‘অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে ‘যথাযথভাবে আপিল’ করার কথা জানিয়েছেন।
তবে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি তার সমর্থকেরা কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্ট ভবনে হামলা চালায়।
‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ দাবি বলসোনারোর
বলসোনারো সবসময় দাবি করে আসছেন যে তার বিরুদ্ধে মামলা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’। তবে ২০২৬ সালের নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ ঠেকাতেই এই মামলা করা হয়েছে বলে অতীতে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। যদিও অন্য একটি মামলায় এর আগেই তাকে সরকারি পদের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। একে তিনি ‘উইচ হান্ট’ বা তার মতাদর্শের জন্য সংঘবদ্ধ প্রচারণা বলেও অভিহিত করেছেন।
