যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভেনেজুয়েলায় অভিবাসী প্রত্যাবাসন ফ্লাইট পুনরায় চালুর অনুমতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ভেনেজুয়েলার কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভেনেজুয়েলার পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার থেকে প্রত্যাবাসন ফ্লাইট পুনরায় চালুর অনুরোধ পাওয়ার পর তারা বিষয়টি অনুমোদন করেছে।
গত কয়েক মাস ধরে সপ্তাহে দুই দিন এসব ফ্লাইট চলছিল। তবে গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এরপর এ ধরনের ফ্লাইট কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। যা আবার শুরু হতে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের ওই মন্তব্য কারাকাসে উদ্বেগ এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, কারণ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওয়াশিংটন মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেছে।
ভেনেজুয়েলা জানায়, ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দমন অভিযানের সময় এসব ফ্লাইটে প্রায় ১৪ হাজার ভেনেজুয়েলান নিজ দেশে ফিরে এসেছে।
এদিকে, সাধারণ ক্ষমার নিশ্চয়তায় দেশ ছাড়তে রাজি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই এ তথ্য সামনে এলো।
খবরে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর দেশত্যাগের নিরাপদ পথ (সেফ প্যাসেজ) ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে স্বল্প সময়ের এক ফোনালাপে মাদুরো যেসব অনুরোধ করেন, ট্রাম্প সেগুলোর বেশিরভাগই নাকচ করে দেন বলে ওই কথোপকথন সম্পর্কে অবহিত চারটি সূত্র জানিয়েছে।
ক্যারিবীয় সাগরে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্থল অভিযানের হুমকি এবং মাদুরোকে যুক্ত করে ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ নামে গোষ্ঠীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে।
মাদুরো ও তার সরকার সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষত তেলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার উদ্দেশ্যে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করছে।
তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ফোনকলে মাদুরো ট্রাম্পকে বলেন, তিনি ভেনেজুয়েলা ছাড়তে রাজি, তবে তার এবং পরিবারের জন্য পূর্ণ সাধারণ ক্ষমার নিশ্চয়তা দিতে হবে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে থাকা মামলা বন্ধ করাও অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন, মাদক পাচার বা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত শতাধিক ভেনেজুয়েলান সরকারি কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধও জানান তিনি।
