সমুদ্রঘেরা দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকায় দেখা দিয়েছে তীব্র লবণ সংকট। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম বেড়ে গেছে দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু তা দিয়েও লবণ পাওয়া যাচ্ছে না।
সুপারমার্কেটগুলোতে নেই লবণের সরবরাহ। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। লবণের খোঁজে দিনের পর দিন এক শহর থেকে আরেক শহরে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা।
দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা জানায়, শ্রীলংকায় ভারি বৃষ্টিতে লবণের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। সেকারণেই লবণের এ বিরল সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করে ডেইলি মিরর পত্রিকার সম্পাদক জামিলা হুসেইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, লবণের চরম সংকট চলছে। সুপারমার্কেটের তাকগুলোতে লবণ নাই হয়ে যাচ্ছে, ভোক্তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন।
ওদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রীলংকার এক বাসিন্দা লেখেন, গত কয়েক দিন ধরে লবণের খোঁজে ঘুরছি। অবশেষে বোরালাসগামুয়া শহরে গিয়ে লবণ পেলাম।
২০২২ সালের নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট থেকে এখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলংকা। ওই সময় বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে দেশটি পর্যাপ্ত জ্বালানি ও কয়লা আমদানি করতেও অপারগ ছিল।
সেই বিপর্যস্ত অবস্থা পুরোপুরি না কাটতেই শ্রীলংকায় নতুন ধাক্কা হয়ে এসেছে লবণের এ সংকট।
গত ১৫ মার্চ থেকে ভারি বৃষ্টি ও সূর্যের আলোর অভাবে শ্রীলংকার হামবানটোটা, এলিফ্যান্ট পাস ও পুট্টালাম এলাকার লবণ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে।
গত সপ্তাহে ভারি বৃষ্টির কারণে প্রায় ১৫ হাজার টন সংগৃহীত লবণ ধুয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পুট্টালামের লবণ উৎপাদকরা। এখন ৫০ কেজির একটি লবণের বস্তার দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে।
পুট্টালামে দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ লবণ উৎপাদন হয়। শ্রীলংকায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের জন্য সাধারণত বছরে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন লবণের চাহিদা থাকে।
গত বছর সরকারি ও বেসরকারি লবণ উৎপাদকরা ১ লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ উৎপাদন করলেও তা গোটা দেশের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ছিল না।
শ্রীলংকার বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াসানথা সমারাসিংহে জানিয়েছেন, ভারত থেকে ৩ হাজার ৫০ মেট্রিক টন লবণের একটি চালান বুধবার শ্রীলংকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এর আগে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ টন লবণের একটি চালান শ্রীলংকায় এসেছিল।