English

25 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ৮, ২০২৫
- Advertisement -

সমাবেশে এসেই মাস্ক খুলে ফেললেন ট্রাম্প

- Advertisements -

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাস্কের ওপর বিতৃষ্ণা করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই। ভাগ্যের ফেরে করোনায় আক্রান্ত হলে মাস্ক পরতে বাধ্য হন তিনি। তবে তাঁর দাবি, সংকটের সে সময় তিনি পার করে এসেছেন; শুরু করে দিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারও। আর প্রচারের প্রথম কাজ হিসেবেই তিনি মুখ থেকে মাস্ক সরিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে রিপাবলিকান সমর্থকদের জন্য আয়োজিত একটি ছোটখাটো সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমার দারুণ লাগছে।’ ট্রাম্পের চিকিৎসকরাও অবশ্য জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট আর ভাইরাস ছড়ানোর অবস্থায় নেই। উন্নতি হয়েছে তাঁর। তবে গত বৃহস্পতিবারের পর প্রথমবারের মতো দেওয়া প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্যে ট্রাম্প করোনা নেগেটিভ হয়েছেন কি না, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে ট্রাম্পের প্রচার শুরু ও আচরণ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টি ও তাদের প্রার্থী জো বাইডেন। এক নির্বাচনী সমাবেশে ‘নৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া’ এই প্রেসিডেন্টকে ভাইরাস নিয়ে শৈথিল্য প্রদর্শন না করার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট।
গত ২ অক্টোবর সস্ত্রীক মার্কিন প্রেসিডেন্টের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে রেমডেসিভিরের পাশাপাশি তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিকের একটি ককটেল দেওয়া হয়। মজার বিষয় হচ্ছে, ক্ষমতায় আসার পর এই অ্যান্টিবায়োটিক ককটেল নিয়ে গবেষণায় অর্থায়ন ট্রাম্প নিজেই বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা নিয়ে শুরু থেকেই তাঁর চিকিৎসকরা লুকোচুরি খেলছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গত শনিবার তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে যে বিবৃতি তাঁর চিকিৎসক শন কনলি প্রকাশ করেছেন, তাতেও লুকোচুরি রয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরীক্ষায় দেখা গেছে, ট্রাম্প অন্যদের সংক্রমণ করতে পারবেন এমন ঝুঁকি নেই। তবে তিনি ভাইরাস নেগেটিভ কি না বা সর্বশেষ তাঁর পরীক্ষা কবে করা হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
ট্রাম্প অবশ্য গত শনিবার থেকেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। ওই দিন দৃশ্যত তাঁকে বেশ ‘তরতাজাও’ দেখাচ্ছিল। হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার আগে মাস্ক খুলে ফেলতে দেখা যায় তাঁকে। এ সময় সমর্থকদের বেশির ভাগেরই গায়ে হালকা নীল টি-শার্ট আর মাথায় ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ বা এমএজিএ স্লোগান লেখা টুপি ছিল। এ মঞ্চেই হাসিমুখে ‘নির্বাচনী প্রচার’ সারলেন সদ্য হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের ব্যালকনিতে পা রেখেই তিনি বলেন, ‘আমার দারুণ লাগছে।’ সেই সঙ্গে সার্জিক্যাল মাস্কটিও খুলে ফেলেন।
সাধারণত ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার চলে ঘণ্টা দেড়েক ধরে। তবে গত শনিবার ট্রাম্প বক্তব্য দেন মাত্র ১৮ মিনিট। হোয়াইট হাউস অবশ্য দাবি করেছে, এটি নির্বাচনী প্রচার ছিল না। আজ সোমবার থেকে পূর্ণাঙ্গ রূপে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন ট্রাম্প। তাঁর ফ্লোরিডা ও ফিলাডেলফিয়ায় যাওয়ার কথা আছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গত শনিবার মূলত রিপাবলিকান ভোটারদের উৎসাহিত করতেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করেন ট্রাম্প; যদিও নির্বাচনী প্রচারের সব কিছুই এতে উপস্থিত ছিল। বক্তৃতায় জো বাইডেনকে একহাত নিয়েছেন তিনি। এ সময় সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘আগামী নির্বাচন আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা ঘর থেকে বের হন এবং ভোট দিন। আমি আপনাদের সবাইকে ভালোবাসি।’ প্রতিপক্ষের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা অবৈজ্ঞানিকভাবে লকডাউন করে করোনার প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া ধ্বংস করে দিচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমরা এই চীনা ভাইরাস পরাজিত করব। এটি একসময় অদৃশ্য হয়ে যাবে, অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।’ এই সমাবেশে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হলেও বেশির ভাগ সমর্থকই মাস্ক ছাড়াই চলে আসে।
জনস হপকিন্স হাসপাতালের দেওয়া হিসাব অনুসারে, করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে এই পর্যন্ত দুই লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। ট্রাম্পের গত শনিবারের সমাবেশ নিয়ে এ কারণেই আপত্তি রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের। দলের জ্যেষ্ঠ কংগ্রেসম্যান অ্যাডাম স্কিফ বলেন, প্রেসিডেন্ট নৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। এ কারণেই আরেকটি ‘সুপার স্প্রেডার’ সমাবেশের আয়োজন করেছেন তিনি। এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে মনোনীত ব্যক্তির নাম ঘোষণার জন্য তিনি একই ধরনের সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। এর পরই ট্রাম্পসহ হোয়াইট হাউসের ডজনখানেক কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হন।
জো বাইডেন গত শনিবার দেওয়া এক টুইটে বলেন, ‘তাদের (সমাবেশে উপস্থিতদের) উচিত ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা। এটুকু দায়িত্ব তাদের পালন করা উচিত ছিল।’ বাইডেন অবশ্য ভালোভাবেই নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার তিনি পেনসিলভানিয়ায় প্রচার চালান। জরিপগুলো বলছে, বাইডেন ঠিক পথেই চলেছেন। শনিবার পর্যন্ত প্রায় সব জাতীয় জরিপে বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে দুই অঙ্কের সংখ্যায় এগিয়ে ছিলেন। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/b7j7
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন