ইরানের পরমাণু কর্মসূচির কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি নাতানজ শহরে এই হামলা চালানো হয়েছে। রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নাতানজ শহরকে নেতানিয়াহু ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘মূল কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই হামলা ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির প্রচেষ্টায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের সরাসরি লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে।
’ এ ছাড়া নেতানিয়াহু হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘প্রয়োজন হলে এমন হামলা আরো চালানো হবে। যতদিন ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাবে, ততদিন আমরা আমাদের অভিযান বন্ধ করব না।’
এদিকে ইরানে হামলা চালানোর পর ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘খুব শীঘ্রই ইসরায়েলের ওপর পাল্টা হামলা’ চালাতে পারে ইরান।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘ইসরায়েল তাদের নিকৃষ্ট ও রক্তাক্ত চরিত্র আবারও প্রকাশ করেছে। এই হামলার মাধ্যমে তারা এমন এক ভাগ্যের দিকে এগোচ্ছে, যার পরিণতি হবে তিক্ত ও অবশ্যম্ভাবী।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে খামেনি বলেন, ‘বিশ্ববাসীর সামনে আজ ইসরায়েলের আসল চেহারা আরও নগ্ন হয়ে গেছে। তারা আবাসিক এলাকাকে লক্ষ্য করে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে মানবতার প্রতি তাদের অবজ্ঞা প্রমাণ করেছে।
জেরুজালেমে অবস্থানরত একজন বিবিসি সংবাদদাতা জানিয়েছেন, সাইরেনের বিকট শব্দে এবং মোবাইলে জরুরি সতর্কবার্তা পেয়ে তারা জেগে ওঠেন। ইরানের ওপর যখন হামলা চালানো হয় ইসরায়েলের মানুষ তখন ঘুমাচ্ছিলেন। ইসরায়েলি হামলায় ইরানের ইসলামি রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোর এর (আইআরজিসি) প্রধান কার্যালয়েনিহত হয়েছেন বাহিনীটির কমান্ডার হোসেইন সালামি।
এ ছাড়া নিহত হয়েছেন, দুই জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী। তাদের নাম প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। তাদের একজন হলেন, ফেরেয়দুন আব্বাসি। নিহত অপর বিজ্ঞানীর নাম মোহাম্মদ মেহেদী তেহরানচি।