মরক্কোয় বিস্ময়কর এক ডাইনোসরের ফসিল খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যে ডাইনোসরের গলা থেকে বেরিয়ে ছিল প্রায় এক মিটার লম্বা কাঁটা। আজ থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ বছর আগে জুরাসিক যুগে বাস করা এই ডাইনোসরের নাম স্পাইকোমেলাস আফের। গবেষকদের মতে, এটি অ্যাঙ্কাইলোসর পরিবারের সবচেয়ে প্রাচীন সদস্য এবং আফ্রিকা মহাদেশে খুঁজে পাওয়া এই প্রজাতির প্রথম উদাহরণ।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড বাটলার ও ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অধ্যাপক সুসানা মেইডমেন্ট বলেন, ‘এর কাঁটা সরাসরি হাড়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এর গলার চারপাশে বর্মের মতো কলার, পিঠজুড়ে ধারালো কাঁটা এবং লেজের মাথায় অস্ত্রসদৃশ গঠন ছিল।’
গবেষকদের অনুমান, ডাইনোসরটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় চার মিটার, উচ্চতা এক মিটার এবং ওজন দুই টনের কাছাকাছি। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় প্রাচীন অ্যাঙ্কাইলোসররা সরল ও ছোট বর্মে সজ্জিত ছিল, যা পরে বিবর্তনের ধারায় আরও শক্তিশালী হয়। কিন্তু এই আবিষ্কার প্রমাণ করছে, শুরু থেকেই জটিল ও কাঁটাওয়ালা বর্ম নিয়ে বিবর্তিত হয়েছিল তারা। গবেষকদের মতে, প্রথমদিকে এই বর্ম শুধুই প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হলেও ক্রিটেশিয়াস যুগে, যখন টি-রেক্সের মতো হিংস্র শিকারির আবির্ভাব ঘটে, তখন এটি প্রতিরক্ষার অস্ত্র হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মরক্কোর বুলমান শহরের এক কৃষক প্রথম জীবাশ্মটি খুঁজে পান। পরে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল এটি চিহ্নিত করে। অধ্যাপক বাটলার বলেন, ‘প্রথম দেখাতেই বুঝেছিলাম প্রাণীটি আমাদের ভাবনার চেয়ে অনেক বেশি অদ্ভুত।’ স্থানীয় গবেষক দ্রিস উয়ারহাশ বলেন, ‘ধারণা করছি, এ অঞ্চলে আরও অনেক মূল্যবান তথ্য লুকিয়ে আছে।’
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ‘পাঙ্ক রক’ ডাইনোসরের এই আবিষ্কার শুধু এক অদ্ভুত প্রাণীর খোঁজ নয়, বরং পৃথিবীর বিবর্তন ইতিহাসের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করছে। জুরাসিক যুগ থেকে ক্রিটেশিয়াস যুগ পর্যন্ত অ্যাঙ্কাইলোসরদের বর্ম কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা বোঝার ক্ষেত্রে এটি হবে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
