ঘটনাটি চীনের। দেশটির শানসি প্রদেশে প্রতারণার মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চেন হং নামের এক নারী। কিন্তু এই সাজা এড়াতে তিনি আইনি ফাঁকফোকর কাজে লাগাতে অভিনব পন্থা অবলম্বন করেন। তাই বারবার গর্ভধারণের মাধ্যমে কারাদণ্ড এড়ানো সুযোগ পান চেন হং।
গত মে মাসে তৃতীয় সন্তানের জন্মের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তবে শিশুটির নিবন্ধন হয় তার ননদের নামে। পরে চেন স্বীকার করেন, তিনি তালাকপ্রাপ্ত এবং প্রথম দুই সন্তান সাবেক স্বামীর কাছে আছে, আর তৃতীয় সন্তানটি তিনি স্বামীর বোনকে দিয়ে দেন। স্থানীয় প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করে যে, তিনি সচেতনভাবেই গর্ভধারণকে জেল এড়ানোর কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ফলে সাজা শেষ হওয়ার এক বছরেরও কম বাকি থাকতে তাকে আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
চীনা বিচার বিভাগ জানিয়েছে, চেন হং-কে আইনের বিধান বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বাকিটা সাজা সঠিকভাবে ভোগ করতে তিনি রাজি হয়েছেন।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই শিশুদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে লিখেছেন, “এই তিনটি শিশু জন্ম নিয়েছে শুধু মায়ের কারাবাস এড়ানোর জন্য— যা দুঃখজনক।”
আরেকজন লিখেছেন, “আমার বেশি বিস্ময় লেগেছে, কীভাবে তিনি ইচ্ছেমতো গর্ভবতী হতে পেরেছেন।”
আগেও ঘটেছে এমন ঘটনা
এটাই প্রথম নয়। ২০০৫ সালে দুর্নীতির দায়ে আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেং নামের এক নারী টানা ১০ বছরে ১৪ বার গর্ভবতী হওয়ার দাবি করেছিলেন, যার মধ্যে ১৩টি ঘটনা সত্য ছিল। এক দশক ধরে জেল এড়ানোর পর অবশেষে তিনি সাজা ভোগ শুরু করেন।
চীনের আইন অনুযায়ী, গুরুতর অসুস্থতা, গর্ভাবস্থা বা সন্তান লালনপালন, কিংবা শারীরিক-মানসিক অক্ষমতার ক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্তরা কারাগারের বাইরে শাস্তি ভোগ করতে পারেন। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে ‘সংশোধন’ কার্যক্রমের আওতায় তাদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। মূলত এই সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে চার বছরের মধ্যে একই পুরুষের সঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দেন চেন হং নামের ওই নারী।