দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি রেস্তোরাঁ খাদ্য সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছে। সিউলের গ্যাংনাম জেলায় ওই রেস্তোরাঁটি খাবারের ওপর পিঁপড়া ছড়িয়ে তা পরিবেশন করত। এনডিটিভি রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দ্য কোরিয়া টাইমসের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলেছে, উদ্ভাবনমূলক কোরীয় খাবারের জন্য পরিচিত রেস্তোরাঁটিতে শরবতের ওপর পিঁপড়া ছড়িয়ে পরিবেশন করা হয়েছিল।
প্রায় ১২ হাজার খাবারের সাজসজ্জা হিসেবে ব্যবহারের জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ড থেকে শুকনো পিঁপড়া আমদানি করত বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১২০ মিলিয়ন ওন আয় করেছে তারা।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পঙ্গপাল, ফড়িং ও মিলওর্মের মতো কিছু পোকামাকড় খাদ্য হিসেবে অনুমোদিত। এ ছাড়া রেশম গুটির শুককীট একটি জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড হিসেবে পরিচিত।
তবে দেশটিতে পিঁপড়া খাদ্য উপাদান হিসেবে অনুমোদিত নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ব্লগ পোস্টে এই খাবারটি সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার খাদ্য ও ওষুধ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। পিঁপড়া থাকা খাবার গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, অনেকেই এটিকে উন্নত অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রেস্তোরাঁর মালিকের দাবি, তারা জানতেন না যে দক্ষিণ কোরিয়ায় পিঁপড়া আইনত খাদ্য উপাদান হিসেবে স্বীকৃত নয়।
রেস্তোরাঁটি ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বরের মধ্যে এক্সপ্রেস মেইলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ড থেকে দুই ধরনের পিঁপড়া আমদানি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন,‘পিঁপড়াকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে হলে রেস্তোরাঁগুলোকে খাদ্য নিরাপত্তা বিধিমালার অধীনে মান ও বিস্তারিত বিবরণী জানিয়ে অস্থায়ী অনুমোদন নিতে হবে। আমরা এই তদন্তের ফলাফল সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকারকে জানিয়েছি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।’
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে, পোকামাকড়কে পুষ্টিকর ও টেকসই খাদ্য উৎস হিসেবে ধরা হয়। থাইল্যান্ডে ঝিঁঝি পোকা, পিঁপড়ার ডিম, ফড়িং ও উইপোকার মতো ভাজা পোকামাকড় স্ট্রিট ফুড হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।
একইভাবে মেক্সিকোতে চ্যাপুলিন (ফড়িং) ও এসকামোলস (পিঁপড়ার লার্ভা) সাধারণত টাকো বা সসে ব্যবহৃত হয়।
এনডিটিভি আরো জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো পোকামাকড়কে খাদ্য উপাদান হিসেবে অনুমোদন দেয়। ২০২১ সাল নাগাদ দেশটির পোকামাকড় চাষভিত্তিক শিল্প থেকে আনুমানিক ৪৪.৬ বিলিয়ন ওন (৩২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আয় হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশও কিছু পোকামাকড়ের প্রজাতি খাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে।