English

28 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ১৬, ২০২৫
- Advertisement -

গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত

- Advertisements -
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজা শহরের হাসপাতালগুলোতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ইসরায়েলের অভিযানের পর গাজা সিটি ফের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, রবিবার রাতভর গাজাজুড়ে ভারী বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যেই নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ আঘাতের শিকার হয়েছে।
যেখানে চারটি হাসপাতাল রয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামলায় অন্তত আট ফিলিস্তিনি নিহত এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ‘এই মুহুর্তে আমরা মাটির নিচে ও ওপরে সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে বড় ধরনের হামলা চালাচ্ছি।’ ১০ দিন আগে ইসরায়েলের প্রাথমিক স্থল আক্রমণের সময়ও বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গাজা সিটি।

ইন্টারনেট মনিটরিং গ্রুপ নেটব্লকসের বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, গত এক মাসে তৃতীয়বারের মতো যোগাযোগ বন্ধের ঘটনা ঘটল।

হামলার শিকার মেডিকেল কমপ্লেক্সে আল-নাসের শিশু হাসপাতাল, রান্টিসি বিশেষায়িত হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল এবং মানসিক হাসপাতাল রয়েছে। রান্টিসি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক সুলেমান কাউদ বলেন, ‘সেই রাতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী আমাদের কিছু কর্মীদের ডেকেছিল এবং বলেছিল তারা হাসপাতালের চারপাশে ফায়ার বেল্ট তৈরি করবে। এরপর ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান মানসিক হাসপাতাল এবং রান্টিসি হাসপাতালের মাঝখানের এলাকায় আঘাত হানে।

এতে কিছু মেডিকেল কর্মীসহ ৩৫ জন আহত হয়। দুই ঘন্টা পরে রান্টিসি হাসপাতালের পাশাপাশি এর দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব দিকেও হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। চিকিৎসক কাউদ আরো বলেন, ‘শিশুদের ক্যান্সার ওয়ার্ড হাসপাতালের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত। সেখানে ৩০ টিরও বেশি শিশু কেমোথেরাপির চিকিৎসা নিচ্ছিল।’

এরপর তৃতীয়বারের মতো হাসপাতালটিতে হামলা চালানো হয়।

যেখানে অ্যাম্বুলেন্স এবং অন্যান্য যানবাহন পার্ক করা ছিল। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোও সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। কাইদ বলেন,‘আমাদের ৮০ থেকে ১০০জন রোগী এবং ৭০০টি বাস্তুচ্যুত পরিবার সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। সব মিলিয়ে ৫ হাজার মানুষ সেখানে আছে। সৌর প্যানেল এবং পানির ট্যাংকগুলোও হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। যার অর্থ রান্টিসি হাসপাতালে প্রবাহিত এক ফোঁটা পানিও নেই।’

হাসপাতালের হামলার কারণে রাবা আল-রাদি নামে এক ফিলিস্তিনি তার অসুস্থ নাতনী সিদরাকে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সিদরা ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং ইসরায়েলি বোমা হামলা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙ্গে যায়। রাবা বলেছেন, ‘আমরা কামাল আদওয়ান হাসপাতালে গিয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাদের রান্টিসি হাসপাতালে আসতে বলেছিল। এখন রান্টিসি আমাদের শিফা হাসপাতালে যেতে বলছে কিন্তু রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা গাড়ি নেই।’

গাজার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে অন্তত ১৬টি পরিষেবার বাইরে রয়েছে। অবরুদ্ধ ছিটমহলের ৭২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের মধ্যে ৫১টি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। গাজা উপত্যকায় একমাত্র মানসিক হাসপাতালটিও আর রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারছে না। মানসিক হাসপাতালের জেনারেল ডিরেক্টর জামিল সুলেমান বলেন, ‘আমরা দিনে ৫০ থেকে ৭০ জন রোগীকে চিকিৎসা দিতাম। এখন যারা ওষুধ নিতে আসছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্রমাগত বোমার শব্দের কারণে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। তারাও চিকিৎসা নিতে এসেছিল। জামিল আরো বলেন,‘শরীরের ক্ষত নিরাময় করা যায় কিন্তু মানসিক ক্ষত অনেক গভীর।’

জামিল আরো বলেন, গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলা অব্যাহত থাকলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘যদি রোগীর অধিকারের কোনো নিশ্চয়তা না থাকে, তাহলে একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা থাকার কোনো মানে নেই। আমরা যদি পশু হতাম, তাহলে আমাদেরও অধিকার থাকত।’

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/x3ur
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন