ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ১২০০ সক্রিয় ও রিজার্ভ অফিসার গাজায় চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিরল প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ-এর তথ্য অনুসারে, তারা একটি খোলা চিঠিতে যুদ্ধ বন্ধ এবং জিম্মিদের মুক্তির দাবি তুলেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১,২০০ কর্মকর্তা ও কমান্ডারের স্বাক্ষরযুক্ত এই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এই যুদ্ধ ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যুদ্ধ, যা অনৈতিক এবং ধ্বংসাত্মক।’
চিঠিতে তারা সতর্ক করে দেন যে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে সৈন্যদের মানসিক স্বাস্থ্যে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে এবং যুদ্ধাপরাধের ঝুঁকি বাড়বে। চিঠিতে সৈন্যরা বলেন, গাজা যুদ্ধ ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না বরং আরও হুমকি তৈরি করছে। তারা সরাসরি সরকারের সিদ্ধান্ত ও সেনা নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যুদ্ধ বন্ধের জোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগেও একই রকম একটি চিঠি প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি জিম্মিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। সেই আবেদনেও সেনাবাহিনীর রিজার্ভ সদস্য, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও কমান্ডাররা যুক্ত ছিলেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, যা বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়েছে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫৪,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলমান।
এই খোলা চিঠি শুধু যুদ্ধের নৈতিকতা নয়, বরং সেনাবাহিনীর ভেতরের প্রতিরোধের ইঙ্গিত বহন করে। ইসরায়েলের ভেতর থেকেই এখন উঠছে প্রতিবাদের আওয়াজ।