পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার দলকে ‘গোটা পাকিস্তানজুড়ে বড় ধরনের আন্দোলন’ শুরুর প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও টিভি।
সোমবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তার বোন আলীমা খান। তিনি বলেন, ইমরান খান স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই আন্দোলনের কেন্দ্র হবে না ইসলামাবাদ, বরং এটি হবে দেশব্যাপী।
আন্দোলনের কোনো নির্দিষ্ট সময় জানানো না হলেও আলীমা খান বলেন, ইমরান খান বলেছেন, তিনি মাথা নত করবেন না—যদি সারাজীবন কারাবন্দি থাকতে হয়।
ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, তাকে একজন সাধারণ বন্দির ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। গত আট মাসে সন্তানদের সঙ্গে মাত্র একবার কথা বলতে পেরেছেন তিনি। এমনকি পাঠানো বইপত্রও কারা কর্তৃপক্ষ আটকাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকের সেবা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে তাকে।
দলের ভেতর বিশ্বাসঘাতকদের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে ইমরান বলেন, যারা ‘উইকেটের দুই পাশে খেলে,’ তাদের জন্য দলে কোনো জায়গা নেই।
অন্যদিকে, আন্দোলনের প্রস্তুতির মধ্যেই সরকার ও পিটিআইয়ের মধ্যে নতুন করে সংলাপ শুরুর সম্ভাবনার কথাও উঠে এসেছে। তবে সরকারি পর্যায়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা চলছে না বলে জানিয়েছেন খাইবার পাখতুনখোয়া সরকারের এক উপদেষ্টা।
সূত্র অনুযায়ী, পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর ও ব্যারিস্টার সাইফ এই আলোচনার প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। য দিও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে সংলাপ কিছুটা থমকে ছিল।
তবে, খাইবার পাখতুনখোয়ার তথ্য উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আলী সাইফ জিও নিউজকে জানিয়েছেন, বর্তমানে পিটিআই কোনো দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপে নেই। তবে ইমরান খানের মুক্তির জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গত সপ্তাহে ব্যারিস্টার সাইফ আদিয়ালা জেলে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেন এবং সূত্র বলছে, সেখানেই তিনি সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পান।
প্রসঙ্গত, ৭১ বছর বয়সি সাবেক ক্রিকেটার-রাজনীতিবিদ ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ পর্যন্ত একাধিক মামলা রয়েছে, যা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর থেকে শুরু হয়।