পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ফের চরম নাটকীয়তা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পর এবার সাসপেন্ড করা হলো বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে।
বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য চলাকালে বিজেপি বিধায়করা একের পর এক স্লোগান দিতে থাকেন।
তারা অভিযোগ তুলেন সরকার ভোট চুরি করেছে, গণতন্ত্র ধ্বংস করছে। পাল্টা শাসক শিবির থেকে স্লোগান ওঠে, ‘গদি চোর বিজেপি’।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের একাধিকবার সতর্ক করে বলেন, বিধানসভার মর্যাদা ভঙ্গ করা উচিত নয়, তারা চাইলে বাইরে গিয়ে স্লোগান দিতে পারেন। কিন্তু বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ আসন ছাড়তে অস্বীকার করে শুভেন্দু অধিকারীর সাসপেনশন প্রসঙ্গে সরব হন।
প্রতিবাদস্বরূপ তিনি নিজের আসনে শুয়ে পড়েন। পরে কয়েকজন মার্শাল তাকে টেনে-হিঁচড়ে সভা থেকে বের করে দেন। এই সময় বিধানসভা কক্ষে হাতাহাতি হয় এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিজেপি বিধায়করা শঙ্কর ঘোষকে ঘিরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং স্লোগান দেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে শঙ্কর ঘোষকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকেও অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হয়। এর আগেই বিজেপি প্রশ্নোত্তর পর্ব বয়কট করেছিল এবং বিশেষ অধিবেশনে বাঙালিদের হেনস্থার প্রসঙ্গ তুলেছিল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশনে কড়া ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “বিজেপি বাংলা বিরোধী, বাংলার ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে, ভাষাকে আঘাত করছে। বিজেপি দেশের লজ্জা, বাংলায় অত্যাচার করলে তার মাশুল দিতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন বিজেপি বিধায়করা ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদীয় নিয়ম ভাঙছে, কাগজ ছুড়ে মারছে যা সম্পূর্ণ অশোভনীয়। তিনি নিজের দলের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, বিরোধীরা যখন শোরগোল করবে, তখন তার পাল্টা প্রতিবাদ করতে হবে।
রাজনৈতিক মহলে ধারণা তৈরি হয়েছে শাসক দল ও বিরোধী দলের সংঘাত আরও গভীর হচ্ছে এবং বিধানসভার কার্যক্রম বারবার অচল হয়ে পড়ছে। বিজেপি শিবির শঙ্কর ঘোষকে টেনে-হিঁচড়ে বের করার ঘটনাকে নজিরবিহীন অপমান হিসেবে দেখছে এবং তারা এই পদক্ষেপের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।