নাইজারে পাওয়া বিরল এক মঙ্গলীয় উল্কাপিণ্ড বিক্রি হওয়ায় দেশটির সরকার তদন্ত শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি পৃথিবীতে পাওয়া মঙ্গলের সবচেয়ে বড় অংশ।
গত ১৬ জুলাই নিউইয়র্কে সোথেবি’স নিলামে অজ্ঞাত এক ক্রেতা ৫৩ লাখ ডলার (ট্যাক্স ও ফি-সহ) দিয়ে উল্কাপিণ্ডটি কিনে নেন।
‘এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮’ নামের এই উল্কাপিণ্ডটির ওজন ২৪ দশমিক ৫ কেজি। এটা সাধারণত পাওয়া মঙ্গলীয় উল্কাপিণ্ডের তুলনায় অনেক বড়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এটি নাইজারের সাহারা মরুভূমির আগাদেজ অঞ্চলে এক উল্কাপিণ্ড শিকারি খুঁজে পান।
ধারণা করা হয়, কোটি বছর আগে মঙ্গলের পৃষ্ঠে কোনো ধূমকেতু বা গ্রহাণুর আঘাতে এটি বিচ্ছিন্ন হয়ে আসে এবং পরে পৃথিবীতে পতিত হয়।
নাইজার সরকার বলছে, উল্কাপিণ্ডটির রপ্তানি প্রক্রিয়া বেআইনি আন্তর্জাতিক পাচারের মতো হতে পারে। দেশের খনিজ, নিরাপত্তা, উচ্চশিক্ষা ও বিচার মন্ত্রণালয় একসঙ্গে এ তদন্ত চালাচ্ছে। বিক্রেতা ও ক্রেতা—দুজনেরই পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। নাইজারে উল্কাপিণ্ড সম্পর্কিত নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই, তবে সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
সোথেবি’স জানায়, উল্কাপিণ্ডটি আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই রপ্তানি করা হয়েছে এবং সব নথিপত্র ঠিকঠাক ছিল। তবে তারা নাইজারের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তথ্য যাচাই করছে।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত মাত্র প্রায় ৪০০টি মঙ্গলীয় উল্কাপিণ্ড পাওয়া গেছে। যেহেতু মানুষ এখনো মঙ্গলে পা রাখেনি, এসব উল্কাপিণ্ডই লাল গ্রহের নমুনা হিসেবে পৃথিবীতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকেরা এগুলোকে সৌরজগতের ইতিহাসের ‘সময়-সংরক্ষক’ হিসেবে বিবেচনা করেন।
এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮ নিলামে ওঠার আগে ইতালির স্পেস এজেন্সিতে প্রদর্শিত হয়েছিল এবং কিছু অংশ ইতালির ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। তবে বড় আকারের মঙ্গলীয় উল্কাপিণ্ডের বেশিরভাগই ব্যক্তিগত সংগ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। বিজ্ঞানী ও নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, গবেষণা, জনসাধারণের শিক্ষা ও ব্যক্তিগত সংগ্রহের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।