মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ সংলগ্ন রাখাইন রাজ্যে ১৭টি টাউনশিপ বা শহরের মধ্যে ১৪টিই আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে। প্রতিবেদন মতে, এই ১৪টির মধ্যে ১০টি শহরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। শহরগুলো হলো রামরি, পাউকতাও, পোন্নাগিউন, রাথেডং, বুথিডং, মংডু, কিয়াকতাও, মিনবিয়া, মাইবোন ও ম্রাউক-উ।
রাখাইনের নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত বাকি চারটি শহর আন, তাউংগাপ, থান্ডওয়ে ও গওয়াতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জান্তার নির্বাচন কমিশন আরও জানিয়েছে, সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিত্তে, কিয়াকফিউ ও মানাউং-এ নির্বাচনের সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এই এলাকাগুলোতেও নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে।
মিয়ানমারে আগামী ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে ধাপে ধাপে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। গত মাসে সাধারণ নির্বাচনের আংশিক সময়সূচি প্রকাশ করে সরকার। এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ৩৩০টি প্রশাসনিক এলাকার প্রায় এক তৃতীয়াংশে অর্থাৎ ১০২টি প্রশাসনিক এলাকায় প্রথম পর্যায়ের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
গত মাসে আরাকান আর্মি জানায়, রাখাইনে জান্তা সরকারকে কোনো নির্বাচন আয়োজন করতে দেওয়া হবে না। দ্য ইরাবতিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গোষ্ঠীটির মুখপাত্র খাইং থুকহা বলেন, আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় কোনো নির্বাচন হতে দেব না। মিয়ানমার সরকারের পরিচালিত কোনো নির্বাচন কখনোই রাখাইন জনগণের কল্যাণে হয়নি।
২০২৩ সালের নভেম্বর পশ্চিম মিয়ানমারে ‘অপারেশন-১০২৭’ নামে সামরিক অভিযানে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টি এবং পাশের চিন রাজ্যের পালেতোয়া টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণে নেয়। বর্তমানে তারা রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তেকে ঘিরে রেখেছে এবং কিয়াকফিউ দ্বীপ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য তীব্র লড়াই চালাচ্ছে। এই দ্বীপে চীনের বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রকল্পগুলি অবস্থিত।
খাইং থুকহা বলেন, নির্বাচন মানুষের সেবা করার জন্য হয়। যদি তা না হয়, তবে তা কেবল জনগণকে বিভ্রান্ত করবে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, জান্তার এই নির্বাচন কেবলই ধোঁকা এবং স্থানীয় জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।