বিশ্বব্যাংকের নতুন আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৪৪.৭ শতাংশ—অর্থাৎ প্রায় ১১ কোটি মানুষ—দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। নতুন এই সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে দৈনিক মাথাপিছু আয় ৪.২০ ডলারে।
বিশ্বব্যাংকের নিয়মিত বৈশ্বিক হালনাগাদের অংশ হিসেবে দারিদ্র্যসীমা পুনঃনির্ধারণ করা হয়, যা বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় করে করা হয়েছে।
নতুন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানের ১৬.৫% জনগণ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে, যাদের দৈনিক আয় ৩ ডলারের নিচে। এর আগের ২.১৫ ডলারের মানদণ্ড অনুযায়ী এ হার ছিল মাত্র ৪.৯%।
অপরদিকে, আপার-মিডল ইনকাম দারিদ্র্যসীমা হিসাবে ধরা ৮.৩০ ডলার দৈনিক মাথাপিছু।এ হিসাবে পাকিস্তানের ৮৮.৪% মানুষকে এর আওতায় ফেলেছে।
নতুন মান অনুযায়ী, পাকিস্তানের যেসব মানুষ দৈনিক ১২০০ রুপির (প্রায়) নিচে আয় করে, তারা এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বলে গণ্য হচ্ছেন। চরম দারিদ্র্যসীমার আওতায় রয়েছে প্রায় ৩৯.৮ মিলিয়ন মানুষ।
নতুন এই দারিদ্র্যসীমাগুলো নির্ধারিত হয়েছে ২০২১ সালের ক্রয়ক্ষমতার সাম্য তথ্যের ভিত্তিতে, যা ইন্টারন্যাশনাল কম্পারিজন প্রোগ্রাম (আইসিপি) দ্বারা সরবরাহ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পাকিস্তান কান্ট্রি ডিরেক্টর নাজি বেনহাসিন বলেন, এই হালনাগাদগুলো পাকিস্তানের দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরে এবং আমাদের নীতিনির্ধারক ও উন্নয়ন অংশীদারদের জন্য ঝুঁকি হ্রাস ও সহনশীলতা বৃদ্ধির প্রয়াসকে আরও জোরদার করে।
তিনি আরও বলেন, নতুন সংখ্যাগুলো দেশের জীবনমানের অবনতি নির্দেশ করে না। বরং এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হালনাগাদ ও অন্যান্য দেশের উন্নত তথ্যের প্রতিফলন।
উল্লেখ্য, এই দারিদ্র্যসীমা মূলত আন্তর্জাতিক তুলনার জন্য ব্যবহৃত হলেও পাকিস্তানে জাতীয় দারিদ্র্যসীমা অপরিবর্তিত রয়েছে এবং দেশীয় নীতি ও কর্মসূচি নির্ধারণে সেটিই প্রধান মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই অনুমানগুলো ২০১৮/১৯ সালের হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (HIES)-এর তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি।
এই হালনাগাদ ‘বিশ্বব্যাংক গ্লোবাল পভার্টি জুন আপডেট ২০২৫’-এর অংশ। খুব শিগগিরই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ‘পাকিস্তান পভার্টি, ইকুইটি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স অ্যাসেসমেন্ট’। যা এই দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে তুলে ধরবে। যা অর্থনৈতিক অসমতা, অ-মৌলিক দারিদ্র্যের চিত্র, ও দারিদ্র্যের মূল চালকগুলোর বিশ্লেষণসহ পাকিস্তানের সামনে উন্নয়ন ও সহনশীলতার রূপরেখা দেবে।