পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা বৃদ্ধি করতে বেশকিছু ইসলামি আইনে শিথিলতা এনেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। নতুন নিয়মে অবিবাহিত যুগল এখন থেকে একসঙ্গে থাকতে পারবে। এ ছাড়া ইসলামে নিষিদ্ধ অ্যালকোহলও গ্রহণ করতে পারবে।
আজ শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হলো উপসাগরীয় এ দেশটি। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর পর্যটকরা প্রতিনিয়ত এখানে ভিড় জমান। পর্যটকদের জন্য অ্যালকোহল পান ও অবকাশ যাপনের যাবতীয় ব্যবস্থা থাকলেও দেশটির নাগরিকরা এগুলোকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেন।
আরব আমিরাত এমন সময়ে এ নিয়মগুলো শিথিলের ঘোষণা দিলো যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আইনের শিথিলতার মাধ্যমে দেশটিতে ইসরায়েলি বিনিয়োগ বাড়বে। পাশাপাশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে।
আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএম নিউজ এজেন্সি ও সংবাদপত্র দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, দেশটি তাদের ইসলামি আইনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বাড়ানোর জন্য ইসলামি আইনে শিথিলতা এনেছে।
অন্য উপসাগরীয় দেশগুলোর মতো তেল সমৃদ্ধ সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বড় অংশই পরিচালনা করে থাকে প্রবাসীরা। দেশটির জাতীয় সংবাদপত্র জানিয়েছে, দেশটিতে এতদিন অ্যালকোহল গ্রহণ, বিয়ের আগে লিভ টুগেদার ও আত্মহত্যা প্রচেষ্টা শাস্তিযোগ্য হলেও আইনি সংস্কারের মাধ্যমে এগুলোকে বৈধতা দেওয়া হবে। এর আগে লাইসেন্সের মাধ্যমে অ্যালকোহল পানের অনুমতি ছিল কিন্তু নতুন আইনে এ ধরনের কোনো বিধিনিষেধ থাকছে না।
অন্যের জন্য ক্ষতিকারক নয় এমন কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিলেও ‘অনার ক্রাইম’কে শাস্তিযোগ্য হিসেবেই রাখবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। পরিবারের জন্য অসম্মান বয়ে আনার জন্য সংঘটিত অপরাধকেই মূলত দেশটিতে অনার ক্রাইম হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এই ধরনের অপরাধ শাস্তিযোগ্য হিসেবেই থাকবে বলেও জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএম।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবছর হাজারো নারী সামাজিক ও ধর্মীয় কড়া নিয়মের জেরে ‘খুনের শিকার’ হয়। এগুলোর মধ্যে পালিয়ে বিয়ে করা কিংবা পরিবারের জন্য সম্মানহানিকর এমন কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এছাড়া রাস্তায় নারীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগেও পুরুষদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এসব ধর্মীয় কড়া নিয়মগুলোই শিথিলের পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় বাইরাইন ও সুদানও ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তবে ইসরাইলের সঙ্গে মুসলিম দেশ আরব আমিরাতের সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে ‘গুরুতর বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন। রামাল্লা ভিত্তিক প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন এর ব্যাপক নিন্দা জানিয়েছে। এ ছাড়া, গাজায় হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাশেম বলেছেন, ‘ইসরাইলের সঙ্গে আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মানে প্যালেস্টাইনের জন্য গুরুতর ক্ষতি বয়ে আনা। এর মাধ্যমে আরব আমিরাত ইসরাইলের দখলদারিত্বকেই সমর্থন করছে।’
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন