English

27.8 C
Dhaka
শনিবার, আগস্ট ২, ২০২৫
- Advertisement -

বিষ মিশিয়ে ১৪ বন্ধুকে হত্যা, যে সাজা হলো সেই থাই তরুণীর

- Advertisements -

মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার পর পানীয়ের সঙ্গে ভয়ঙ্কর বিষ সায়ানাইড মিশিয়ে হত্যা করতেন এক থাই নারী। এভাবে ১৪ জনকে হত্যা করেছেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বিষাক্ত সায়ানাইড দিয়ে ১৪ বন্ধুকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ওই নারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে থাইল্যান্ডের একটি আদালত।

বুধবার (২০ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ভ্রমণে গিয়ে খাবার ও পানীয়র সঙ্গে বিষ মিশিয়ে এক ধনী বন্ধুকে হত্যা করার জন্য ৩৬ বছর বয়সি নারী সারারাত রাংসিউথাপোর্নকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ব্যাংককের একটি আদালত।

সারারাতের সেই ধনী বন্ধুর মৃত্যুর পর এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু মানতে নারাজ ছিলেন তার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা। পরে ময়নাতদন্তে তার শরীরে সায়ানাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ অবস্থায় সারারাতকে গ্রেফতার করে থাইল্যান্ডের পুলিশ এবং ২০১৫ সালের পর থেকে এমন আরও কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনায়ও সারারাতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়। পাশাপাশি সৌভাগ্যজনকভাবে তার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া একজনেরও হদিস পাওয়া যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের গণমাধ্যমে ‘অ্যাম সায়ানাইড’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন সারারাত। জুয়া খেলার প্রতি আসক্তি ছিলেন তিনি। টাকা পান এমন বন্ধুদেরই টার্গেট করতেন ওই নারী। পরে সায়ানাইড দিয়ে হত্যা করে তাদের গয়না এবং মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করতেন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিলে ৩২ বছর বয়সী বন্ধু সিরিপর্ন খানওংকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাংককের পশ্চিমে অবস্থিত রাচাবুরি প্রদেশে ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন সারারাত। সেখানে একটি নদীতে তারা একটি বৌদ্ধ আচারে অংশ নিয়েছিলেন।

তদন্তকারীরা জানান, সারারাতের সঙ্গে খাবার গ্রহণের পর সিরিপর্ন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। কিন্তু এই সময়টিতে মরণাপন্ন বন্ধুকে সাহায্য করার কোনো চেষ্টাই করেননি সারারাত।

ময়নাতদন্তে সিরিপর্নের শরীরে সায়ানাইডের চিহ্ন পাওয়া যায়। যেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখান থেকে তার ফোন, টাকা এবং ব্যাগ খোয়া গিয়েছিল বলেও জানায় পুলিশ।

সারারাতের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করার পর আদালতে সিরিপর্নের মা কিয়াচানাসিরি মেয়ের ছবির দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তুমি ন্যায়বিচার পেয়েছ। এই পৃথিবীতে আজও ন্যায়বিচার আছে।’

কিয়াচানাসিরি জানিয়েছেন, আদালতে রাগের বশে তিনি সারারাতের দিকে তাকাতেও পারেননি। মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় সারারাত হাসছিলেন। এর আগে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন।

বিচারে সারারাতের স্বামীসহ তার আইনজীবী ও একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকেও বিচার এড়াতে প্রমাণ লোপাটের জন্য অভিযুক্ত করেছেন আদালত। বিচারে তাদের যথাক্রমে এক, দুই বছর এবং চার মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিচারে হত্যাকাণ্ডের শিকার সিরিপর্নের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ লাখ থাই মুদ্রা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সারারাতকে।

সায়ানাইড শরীরে প্রবেশ করলে তা অক্সিজেন কোষকে প্রভাবিত করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। সায়ানাইডের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট এবং বমি হওয়া। এই বিষের ছোট্ট একটি ডোজও মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আর পরিমাণ বেশি হলে মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে।

থাইল্যান্ডে বিষাক্ত এই পদার্থ ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রিত। অনুমোদন ছাড়া কেউ এটি কাছে রাখলে তার দুই বছরের জেল হতে পারে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/n6v9
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন