পাকিস্তানের ‘অবাধ ব্যবহারের’ জন্য ভারতের পশ্চিমা নদীগুলোর পানি প্রবাহিত রাখতে হবে বলে রায় দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত স্থায়ী সালিশ আদালত (পিসিএ)।
সোমবার (১১ আগস্ট) আদালতের ওয়েবসাইটে রায়টি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘ভারত পশ্চিমের নদীগুলোতে তার ইচ্ছামতো নকশায় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে পারে না। নকশা করতে হবে সিন্ধু চুক্তিতে থাকা শর্ত অনুযায়ী।’
মঙ্গলবার রয়টার্সকে পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল মনসুর উসমান বলেন, ‘মোটাদাগে আদালত পাকিস্তানের অবস্থানকেই সমর্থন করেছে, বিশেষ করে নতুন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নকশার ক্ষেত্রে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা এখন পরিষ্কার, ভারত আদালতের রায় লঙ্ঘন করে এই প্রকল্পগুলোর কোনোটিই যে নির্মাণ করতে পারবে না, তা আমি নিশ্চিত।’
তবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও তাদের এক কর্মকর্তা জুন মাসের একতি বিবৃতি দেখিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘নয়াদিল্লি এই আদালতের এখতিয়ারই মানে না।’
রায় প্রকাশিত হওয়ার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘চলতি বছরের ৮ আগস্ট ঘোষিত ও আজ পিসিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সিন্ধু পানিচুক্তি (আইডব্লিউটি) সংক্রান্ত সাধারণ ব্যাখ্যার বিষয়ে আদালতের রায়কে পাকিস্তান স্বাগত জানায়।’
এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে এক হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাকিস্তান অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সতর্ক করে জানায়, তাদের পানির অংশ বন্ধ করার যে কোনো পদক্ষেপ ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ সমান হবে।
প্রসঙ্গত, ভারতের উজান থেকে পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকায় প্রবাহিত নদীগুলোর পানি ব্যবহার নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তিতে পশ্চিম দিকে বয়ে চলা তিনটি নদ-নদী সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের বেশিরভাগ পানি পাকিস্তানকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। আর পূর্ব দিয়ে বয়ে চলা তিনটি নদী ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর পানি ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয় ভারতকে।
সিন্ধু পানিচুক্তি অনুসরণ করেই এসব নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। চুক্তিটি কোনো দেশের পক্ষে একতরফাভাবে স্থগিত বা বাতিল করার বিধান নেই।