ভারতের আহমেদাবাদে গত ১২ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৪১ জন মানুষ প্রাণ হারান। অলৌকিকভাবে সেই দুর্ঘটনা থেকে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে বেঁচে যান যাত্রী বিশ্বকুমার রমেশ। তিনি এখন কেমন আছেন— তা জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে।
রমেশ বলেছেন, নিজেকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান’ মানুষ মনে হলেও বেঁচে থাকা তার কাছে এক ভারী অভিশাপের মতো। কারণ শারীরিক যন্ত্রণার সঙ্গে তাকে প্রতিদিন পোহাতে হচ্ছে মানসিক কষ্টও।
নিজের বেঁচে যাওয়া সম্পর্কে রমেশ বলেন, “এটা অলৌকিক ঘটনা ছিল। কিন্তু আমি জীবনের প্রায় সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। বিশেষ করে আমার ভাই অজয়কে।” অজয় একই বিমানে কয়েকটি আসন দূরে ছিলেন। বিধ্বস্ত বিমানের ২৪১ যাত্রীর একজন ছিলেন তিনিও।
দুর্ঘটনার পর রমেশ যুক্তরাজ্যে ফিরে যান বলে বিবিসি সোমবার (৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। সেখানে তিনি এখনো আঘাতজনিত মানসিক চাপে ভুগছেন। নিজের স্ত্রী এবং চার বছর বয়সী সন্তানের সঙ্গেও এখন ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না তিনি।
রমেশ বলেন, “আমি একমাত্র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি। আমি বিশ্বাস করতে পারি না। দুর্ঘটনায় আমি আমার ভাইকে হারিয়েছি, সে ছিল আমার মেরুদণ্ড। গত কয়েক বছর সে সবসময় আমার পাশে ছিল।”
“এখন যেন আমি শেষ। আমি রুমে একা বসে থাকি। স্ত্রীর সঙ্গে, ছেলের সঙ্গে কথা বলি না। বাড়িতে একা থাকতে পছন্দ করি।”
তিনি আরও জানান, “ওই দুর্ঘটনার পর আমার জন্য সবকিছুই কঠিন হয়ে গেছে। শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আমি। আমার পরিবারও বিপর্যস্ত। আমার মা গত চার মাস ধরে একা বসে থাকেন, কারও সঙ্গে কথা বলেন না। আমিও কারও সঙ্গে কথা বলি না।”
রমেশ জানান, দুর্ঘটনার সময় তিনি বিমানের জরুরি বহির্গমন দরজার পাশের আসনে ছিলেন। বিমানটি বিধ্বস্ত হলে তিনি ছিটকে বাইরে পড়ে যান এবং নিজেই হেঁটে দুর্ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন।
তবে এখনও পা, কাঁধ, হাঁটু এবং শরীরের পেছনের দিকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন তিনি। এ কারণে দুর্ঘটনার পর থেকে কোনো কাজ করতে পারেন না, এমনকি গাড়িও চালাতে পারেন না। হাঁটতেও পারেন না স্বাভাবিকভাবে।
রমেশ বলেন, “যখন আমি হাঁটি, ঠিক মতো হাঁটতে পারি না। স্ত্রীর সহায়তা নিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটি।”
