ভারতকে তার ‘পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে’ ছোট ছোট দেশে বিভক্ত করার ডাক দিয়েছেন অস্ট্রিয়ার অর্থনীতিবিদ ও অ্যাক্টিভিস্ট গুনথার ফেলিঙ্গার। এ নিয়ে ভারতজুড়ে তোলপাড় চলছে।
নিজের এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ফেলিঙ্গার বলেন, ‘আমি ভারতকে ভেঙে দেওয়ার ডাক দিচ্ছি। নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার লোক। আমাদের মুক্ত খালিস্তানের বন্ধু চাই। ’
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, রাশিয়ার থেকে তেল কেনায় ভারতের ওপর শুল্কের চাপ দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই শুল্ক ইস্যুতে ওয়াশিংটন-দিল্লির বড়সড় দূরত্ব প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে। এমনকি সম্প্রতি একসময়ের বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আলাপ-সালাপও বন্ধ হয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিপরীতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করে তার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানে উচ্ছ্বসিত উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন মোদী।
এই প্রেক্ষাপটেই যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্র অস্ট্রিয়ার অ্যাক্টিভিস্ট ফেলিঙ্গার ভারত ভাঙার ডাক দিলেন।
পোস্টে তিনি একটি ম্যাপ জুড়ে দেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে উত্তর ভারতের বড় অংশকেই ‘খালিস্তান’ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। এছাড়া মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ, বিহার, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপূর্ব ভারত, দক্ষিণ ভারতের কেরালা ও তামিলনাড়ুসহ বিভিন্ন অঞ্চল আলাদা আলাদা পতাকার রঙে সজ্জিত।
এরপর এই অস্ট্রিয়ান রাজনীতিবিদ লেখেন, “আজ আমি শিখ ন্যারেটিভ (এক্স হ্যান্ডেল) সঙ্গে দুই ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেছি। কীভাবে খালিস্তান স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে, তা নিয়ে কথা হবে। ভারতকে ‘সাবেক ভারত’ করতে হবে। রাশিয়ারপন্থী স্বৈরশাসক নরেন্দ্র মোদীর কবল থেকে ভারতের জনগণকে কীভাবে মুক্ত করা যায় তা নিয়ে কথা হয়েছে আমার। ”
খালিস্তান আন্দোলন কী
১৯৮০ সালে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ ঘিরে শিখদের একটি অংশ স্বাধীন ‘খালিস্তান’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি তোলে। ওই আন্দোলনকে ‘খালিস্তান মুভমেন্ট’ বলা হয়। আন্দোলনটির জের ধরে অনেক সহিংসতা হয়েছিল এবং মৃত্যু হয়েছিলো হাজারো মানুষের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানের পর এ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।
এই আন্দোলনে জড়িতদের ভারত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেয় এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে।
বর্তমানে ভারতে সেভাবে সংগঠিত হতে না পারলেও শিখরা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ‘খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয়।