ভারতের মান্ডি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভূমিধসে বাবা-মা ও দাদী মারা গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল ১১ মাস বয়সী শিশু। ঘটনাটি ঘটে আনুমানিক রাত ১টার দিকে। তবে শিশুটিকে সকালে একা বাড়ির ভেতরে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়।
সোমবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ঘটনার সময় প্রবল বর্ষণ হচ্ছিল। বৃষ্টির পানি তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ছিল, তাই রমেশ কুমার (পিতা), রাধা দেবী (মাতা) ও পুনম দেবী (দাদী) পানি অন্যদিকে সরাতে বাইরে যান। তখনই হঠাৎ ভূমিধস ঘটলে তিনজনই প্রাণ হারান।
রমেশের বাড়ির উপরের দিকে বসবাস করা প্রতিবেশীরা রাত আনুমানিক ২টার দিকে নিচে নেমে এসে দেখতে পান শুধু শিশুটি ঘরের ভেতরে ঘুমাচ্ছে।
শিশুটির চাচা বলেন, সেই রাতে খুব বেশি বৃষ্টি হচ্ছিল। পানির প্রবেশ বন্ধ করতে তারা বাইরে গিয়েছিলেন। মেয়েটি তখন ঘুমাচ্ছিল। ওরা জানত না যে মেঘভাঙা (ক্লাউডবার্স্ট) বৃষ্টি হয়েছে। পানি সরানোর কাজ করার সময় ভূমিধস ঘটে। প্রতিবেশীরা যারা উপরে থাকত, তারা রাত ২টার দিকে এসেছিল। তখন দেখে যে কেবল শিশুটি ভেতরে ঘুমাচ্ছে। ভোরে, আনুমানিক ৫টা থেকে ৫:৩০-এর মধ্যে আমরা ১২-১৩ জন সেখানে যাই।
তিনি আরও বলেন, তখন পানি অনেক বেশি ছিল, তাই আমরা প্রথমে সেতু পেরিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে যেতে পারিনি। পরে পানি কিছুটা নামলে আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। তখনই আমার ভাইয়ের মৃতদেহ খুঁজে পাই।
রমেশের দেহ ধ্বংসাবশেষের নিচে পাওয়া গেলেও, তার স্ত্রী এবং মা এখনও নিখোঁজ। তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালছে।
তিনি আরও জানান, বিগত কয়েক দিনে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা ওকে কাউকে দেব না, নিজেরাই লালন-পালন করব।
হিমাচল প্রদেশে ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া বর্ষা মৌসুমে অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বৃষ্টিজনিত কারণে – ভূমিধস, হঠাৎ বন্যা ও মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো ঘটনায়। এছাড়া ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়।