English

29 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪
- Advertisement -

মাউন্ট নিরাগঙ্গে অগ্ন্যুৎপাত: বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

- Advertisements -

গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে বড় আকারের একটি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার পর তার আশেপাশের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে হাজার হাজার মানুষ।

শনিবার রাতে হঠাৎ করেই মাউন্ট নিরাগঙ্গ থেকে ঝর্ণার মতো লাভা নির্গত হতে থাকে। এসময় কুড়ি লাখ মানুষ অধ্যুষিত গোমা শহরের আকাশে রক্তিম ঘন মেঘের সৃষ্টি হয়।

লাভার স্রোত এক পর্যায়ে শহরের বিমানবন্দর পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছায়। তবে সেই স্রোত এখন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

আগ্নেয়গিরিটি গোমা শহর থেকে ছয় মাইল দূরে। এর আগে ২০০২ সালে এই আগ্নেয়গিরি থেকে সর্বশেষ অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল। সেসময় ২৫০ জনের মতো নিহত হয়। ঘরবাড়ি হারায় এক লাখ ২০ হাজার মানুষ।

লাভার স্রোত থেকে নিজেদের বাঁচাতে রবিবার ভোরে শহরের বহু বাসিন্দা পার্শ্ববর্তী রোয়ান্ডা সীমান্তের দিকে চলে যায়। অনেকেই গিয়ে আশ্রয় নেয় শহরের পশ্চিম দিকের উঁচু এলাকায়। এসময় তাদের ঘরের আসবাবপত্রও সাথে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

সরকারি ঘোষণার আগেই লোকজন তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর কর্তৃপক্ষের তরফে লোকজনকে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়।

রোয়ান্ডার কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় তিন হাজার মানুষ গোমা থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। সেদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে যে তাদেরকে স্কুল ও উপাসনালয়ে আশ্রয় দেওয়া হবে।

গোমার একজন বাসিন্দা রিচার্ড বাহাতি বলেছেন, তিনি যখন লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পান তখন তিনি বাড়িতেই ছিলেন।

“আমি তখন ঘর থেকে বের হয়ে যাই এবং দেখি যে আকাশ লাল হয়ে গেছে। আমি খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। খুবই দুশ্চিন্তায়। ২০০২ সালেও আমার একই ধরনের সমস্যা হয়েছিল। এই আগ্নেয়গিরি আমাদের সব বাড়িঘর সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে। আর একারণেই এবারও আমি ভীত হয়ে পড়ি,” বলেন তিনি।

অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। গোমা ও বেনি শহরের মধ্যে একমাত্র সংযোগকারী মহাসড়কটি লাভার স্রোতে ডুবে গেছে। সেখানে ভূমিকম্পেরও খবর পাওয়া গেছে।

“সালফারের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে পর্বত থেকে কীভাবে আগুন নির্গত হচ্ছে,” বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন একজন বাসিন্দা ক্রেন এমবালা।

আগ্নেয়গিরিটি যেখানে অবস্থিত সেই ভীরুঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের একজন কর্মকর্তা পার্কের স্টাফদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, এবারের অগ্ন্যুৎপাতের সঙ্গে ২০০২ সালের অগ্ন্যুৎপাতের মিল আছে এবং তারা যেন অনতিবিলম্বে এই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।

লোকজনকে শান্ত থাকার আহবান জানানো হয়েছে। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে কর্তৃপক্ষের তরফে তাদেরকে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়নি। এছাড়াও সোশাল মিডিয়াতে এসংক্রান্ত নানা রকমের পরস্পরবিরোধী তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে।

যোগাযোগ মন্ত্রী প্যাট্রিক মুয়ায় টুইটারে বলেছেন জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সরকার আলাপ আলোচনা করছে। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী রাজধানী কিনশাসায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

পরে তিনি বলেছেন যে লাভার স্রোতের তীব্রতা কমে এসেছে এবং এতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মাউন্ট নিরাগঙ্গ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর একটি।

অভিযোগ উঠেছে এই আগ্নেয়গিরির ওপর ঠিক মতো নজর রাখা হচ্ছে না। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এসংক্রান্ত আর্থিক সহযোগিতা বাতিল করে দেয়।

গত ১০ মে অবজারভেটরির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে নিরাগঙ্গতে ভূকম্পন বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত বছর অবজারভেটরির পরিচালক বিবিসিকে বলেছিলেন যে আগ্নেয়গিরিটি থেকে কয়েক বছরের মধ্যেই অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে।

এই আগ্নেয়গিরিতে ভয়াবহ রকমের উদগীরণ হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সেসময় ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন