রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর প্রায় ৬০০ বছর পরে জ্বলে উঠেছে একটি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির এই যুগপৎ ঘটনা এরই মধ্যে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রে এসেছে।
রোববার (৩ আগস্ট) কুরিল দ্বীপপুঞ্জের কাছে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প। রাশিয়ার জরুরি সেবাবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে*কম উচ্চতার ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা বললেও লোকজনকে উপকূল এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়।
প্যাসিফিক সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) ভূমিকম্পটির মাত্রা সাত বলে নিশ্চিত করেছে। তবে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে তারা।
৬০০ বছর পর আগ্নেয়গিরির জাগরণ
এই ভূমিকম্পের পরেই কামচাটকা উপদ্বীপের ক্রাশেনিনিকভ আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরিত হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আরআইএ এবং বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন, আগ্নেয়গিরিটি থেকে গত ৬০০ বছরের মধ্যে এটিই প্রথম নিশ্চিত অগ্ন্যুৎপাত।
রুশ আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ সংস্থা কামচাটকা ভলকানিক এরাপশন রেসপন্স টিমের প্রধান ওলগা গিরিনা জানিয়েছেন, এই আগ্নেয়গিরি থেকে সবশেষ লাভা উদগীরণ হয়েছিল ১৪৬৩ সালের ৪০ বছরের মধ্যে, তবে সেই সময়ের কোনো বিস্ফোরণ ঐতিহাসিকভাবে নথিভুক্ত হয়নি।
রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয়ের কমচাটকা শাখা জানায়, বিস্ফোরণের ফলে ছয় হাজার মিটার (প্রায় ৩ দশমিক ৭ মাইল) উচ্চতায় ছাইয়ের স্তম্ভ তৈরি হয়েছে এবং এটি পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে ভেসে যাচ্ছে। সৌভাগ্যক্রমে ছাইয়ের পথে কোনো জনবসতি নেই।
এই উদগীরণের জন্য কমলা রঙের অ্যাভিয়েশন কোড জারি করা হয়েছে, যা উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য মাঝারি থেকে উচ্চ ঝুঁকির সতর্কতা বোঝায়।
ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির যোগসূত্র?
গত সপ্তাহে রাশিয়ার ফার ইস্ট অঞ্চলে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ক্লিউচেভস্কয় আগ্নেয়গিরিতেও বিস্ফোরণ ঘটেছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক এই ভূমিকম্পগুলোর সঙ্গে একের পর এক আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের যোগসূত্র থাকতে পারে।
রুশ ভূতাত্ত্বিকরা এরই মধ্যে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে শক্তিশালী আফটারশকের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে কুরিল দ্বীপপুঞ্জ ও কমচাটকা উপদ্বীপজুড়ে।