সাপ ধরতে গিয়ে সাপের ছোবলে প্রাণ গেল এক সাপুড়ের। সাপুড়ের প্রাণনাশী সেই সাপ আবার কাঁচাই চিবিয়ে খেয়ে নিলেন আরেক সাপুড়ে। এ রকম চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়ার সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন পাশের ইউনিয়ন কালীগঞ্জের কাপালিপাড়ার ইমরান আলীর বাড়িতে সাপ ধরতে যান। ইমরান আলীর বাড়ির পাকের ঘরে একটি ইঁদুরের গর্তে বাসা বাঁধে একটি কিং কোবরা সাপ। সঙ্গে ছিল ১৫-১৬টি সাপের বাচ্চা।
খাল খুঁড়ে সাপের বাচ্চাগুলো ধরার পর বড় সাপটি ধরে ফেলেন সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন। সাপটি বস্তায় ঢোকানের আগেই হাতে ছোবল দেয় সেটি। প্রথমদিকে সাপের বিষে কিছু না হলেও বাড়িতে এসে বিষক্রিয়ায় নিস্তেজ হতে থাকেন তিনি। দ্রুত ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মরদেহ বাড়িতে আনার পর একে একে আসতে থাকেন কয়েকজন ওঝা ও সাপুড়ে। তারাও এসে বলেন রোগী মারা গেছেন।
মোজাহার নামক একজন ওঝা বড় সাপসহ বাচ্চাগুলো নিয়ে নেন। পরে গাবতলা বাজারে এসে বড় সাপটি কাঁচাই চিবিয়ে খান তিনি। এ সময় গাবতলা বাজারে তার সাপ খাওয়ার দৃশ্য দেখতে প্রচুর লোক ভিড় জমান।
মোজাহারের বাড়ি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বলদিয়া বাজার এলাকায়। এলাকায় মোজাহার সাপ খাওয়া মোজাহার নামে পরিচিত। তিনিও সাপ ধরেন ও সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
মোজাহার জানান, বয়েজ উদ্দিনকে হাসপাতালে নেওয়ার আগে তিনি খবর পান এবং সাপের পরিচয় পাওয়ার পর বলেছেন তিনি বাঁচবেন না। হাসপাতাল থেকে তাকে ফেরত আনার পর মোজাহারকে ফোনে ডেকে আনেন বয়েজ উদ্দিনের স্বজনরা। এখানে এসে তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। পরে বয়েজ উদ্দিনের ধরা সাপের বাচ্চাসহ বড় সাপটি তারা আমাকে দেন। এগুলো নিয়ে এসে এই বাজারে বড় সাপটি মেরে রক্ত-মাংস খাই। আর ছোট বাচ্চাগুলো ছেড়ে দেব।
তিনি আরও জানান, কাঁচা সাপ খাওয়া তার পুরোনো অভ্যাস।
এদিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পরও বয়েজ উদ্দিন বেঁচে আছেন সন্দেহে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাড়ফুঁক চলছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম আবু সায়েম জানান, সাপে কাটলে ঝাড়ফুঁকে কোনো কাজ হওয়ার কথা না। সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে আনতে হবে। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম মজুত আছে। লোকজনকে আরও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রপ বেশি।