English

28 C
Dhaka
শনিবার, জুন ২৮, ২০২৫
- Advertisement -

স্যাটেলাইট ইমেজ: বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফোর্দোতে খননকাজ শুরু

- Advertisements -

যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় খনন ও মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় গর্ত ভরাট করছে এবং সেখানে নতুন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল, ফোর্দো ছিল তাদের একটি। 

মার্কিন বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট ইমেজিং সংস্থা ম্যাক্সার টেকনোলজিসের শুক্রবারে তোলা ছবিগুলোতে দেখা যায়, ফোর্দোর গুহার প্রবেশপথ এবং মার্কিন বোমার আঘাতস্থলগুলোতে কাজ চলছে। ছবিগুলোতে এক্সকাভেটর ও বুলডোজার দিয়ে উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি ঢালে মাটি সরানোর দৃশ্য ধরা পড়ে।

পেন্টাগনের ভাষ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর’ নামের ভারী বাঙ্কার-ধ্বংসকারী বোমা দিয়ে ফোর্দোর এক্সহস্ট শ্যাফট লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যাতে বোমাগুলো সরাসরি ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারে।

আরও কিছু ছবিতে দেখা যায়, ফোর্দোতে প্রবেশের জন্য নতুন রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে এবং মূল সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরান হয়তো এই ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনার চেষ্টা করছে, যদিও তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরইউএসআই-এর মতে, যদি হামলার পর আর বড় ধরনের কোনো আক্রমণ না হয়, তাহলে ইরান প্রায় সঙ্গে সঙ্গে খননকাজ শুরু করে প্রবেশপথ এবং সরবরাহ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে।

বর্তমানে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলা আপাতত বন্ধ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, হামলার ফলে ইরানের কর্মসূচি কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে।

ইরানের আরও দুটি স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছিল। সেগুলো হলো, নাতানজ ও ইস্পাহান। ফোর্দোর মতো নাতানজেও বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়, আর ইস্পাহানে সমুদ্র থেকে নিক্ষিপ্ত টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়।

এসব হামলার ফলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ইউরেনিয়াম মজুদ এবং যন্ত্রপাতির ওপর কী প্রভাব পড়েছে, তা এখনো পরিপূর্ণভাবে জানা যায়নি।

আরইউএসআই আগে বলেছিল, ফোর্দোর মতো একটি জটিল ভূগর্ভস্থ স্থাপনাকে অকেজো করতে হলে এক জায়গায় বহুবার নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে হয়। পেন্টাগনের এক সংবাদ সম্মেলনে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন জানান, ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ অভিযানের সময় একের পর এক এমওপি বোমা ফেলা হয় ফোর্দোর এক্সহস্ট শ্যাফটে।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স থ্রেট রিডাকশন এজেন্সি প্রায় ১৫ বছর ধরে ফোর্দো স্থাপনাটি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে এসেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ইরান কখনোই এই পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আবার গড়ে তুলতে পারবে না। যদিও অন্যান্য মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং পারমাণবিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামলায় ইরানের কর্মসূচি হয়তো কয়েক মাস বা বছর পিছিয়ে গেছে, তবে তা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে বলা যাচ্ছে না।

কারণ, একটি দেশের জ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বোমা মেরে ধ্বংস করা যায় না। বরং এমন বিশ্লেষণও রয়েছে যে, এই হামলার ফলে ইরান হয়তো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির বিষয়ে আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

ইরানে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ও পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার উদ্দেশ্য ছিল দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে দুর্বল করা। তেহরান অবশ্য বলেছে, তাদের কর্মসূচি শুধু বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য। যুক্তরাষ্ট্র আগে কূটনৈতিকভাবে একটি পারমাণবিক চুক্তির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে সরাসরি হামলার পথ বেছে নেয় এবং পরে শান্তি আলোচনার ডাক দেয়।

ওই হামলার জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত একটি বড় মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, কোনো ক্ষেপণাস্ত্রই ঘাঁটিতে আঘাত হানতে পারেনি এবং তারা আগেই হামলার পূর্বাভাস পেয়েছিল।

বর্তমানে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি বলবৎ আছে, যা আপাতত দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ থামিয়ে রেখেছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/dcy3
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন