রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার তার পরিবহণ মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন। ইউক্রেনের সঙ্গে চার বছরব্যাপী যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পরিবহন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাঁধা আসার পর এই অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ নিলেন তিনি।
প্রায় এক বছর থেকে দায়ীত্বে থাকা রোমান স্টারোভোয়েটকে সরানোর ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি ক্রিমলিন। ইউক্রেন সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে পাঁচ বছর গভর্নরের দায়ীত্ব পালনের পর ২০২৪ সালের মে মাসে এই দায়ীত্ব পেয়েছিলেন স্টারোভোয়েট।
নভগোরদ অঞ্চলের সাবেক গভর্নর আনদ্রেই নিকিতিনকে ভারপ্রাপ্ত পরিবহণ মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুতিনের সঙ্গে তার করমর্দনের ছবি প্রকাশ করেছে ক্রিমলিন।
স্টারোভোয়েটের হঠাৎ বিদায় সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে ক্রিমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের মতে, আনদ্রেই নিকিতিনের পেশাগত গুণাবলী ও অভিজ্ঞতা এই সংস্থাটির কার্য সম্পাদনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে। যেটি এই মুহুর্তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।’
পরিবহন বিভাগ সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন জানিয়েছেন, সেন্ট পিটার্সবার্গে গত মাসে অনুষ্ঠিত ইন্তারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামের আগে থেকেই স্টারোভোয়েটকে সরিয়ে নিকিতিনকে নিয়োগের পরিকল্পনা চলছে।
তবে এই তথ্য অস্বীকার করেছে পরিবহন মন্ত্রণালয়।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে পণ্য পরিবহনের বাধা কমানো ও পণ্যের আন্তঃসীমান্ত প্রবাহ মসৃণ করতে রাশিয়ার পরিবহন শিল্পকে ডিজিটালাইজ করার বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার কথা বলেছিলেন নিকিতিন ।
এদিকে স্টারোভোয়েট কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নর পদ থেকে সরে আসার পর, কুরস্ক অঞ্চলে বিশাল পরিমান ইউক্রেনীয় সেনা প্রবেশ করে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করা সর্বোচ্চ ইউক্রেনীয় সেনা।
তবে এ বছরের শুরুর দিকে এই অঞ্চল থেকে তাদের সরাতে সক্ষম হয় রাশিয়া।
পরবর্তীতে কুর্স্কের কিছু আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এ বছর এপ্রিলে স্টারোভোয়েটের পর দায়ীত্বপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
পরিবহণ বিভাগ সংশ্লিষ্ট অন্য আরেকটি সূত্র দাবি করেছে, স্টারোভোয়েটের পদ মাসখানেক থেকেওই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। যা শুধু পরিবহণ বিভাগের জন্য নয়, কুরস্কে ঘটা কেলেঙ্কারীর জন্যও তিনি প্রশ্নবিদ্ধ ছিলেন।
তবে রয়টার্স এই দাবিটি নিশ্চিত করতে পারেনি।
তবে এ ব্যাপারে পেসকভ বলেছেন, যদি আস্থা হারানোর কোনো ব্যাপার থাকতো তাহলে এটি উল্লেখ করা হতো। ক্রিমলিনের আদেশপত্রে এমন কোনো শব্দের উল্লেখ নেই।