দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে প্রায় ১৭০ বছর আগে তলিয়ে যাওয়া একটি বাণিজ্য জাহাজের খোঁজ পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। এই বাণিজ্য জাহাজের নাম ছিল কনিং উইলেম দ্য টুয়েডে। আর এ ঘটনা ছিল ১৯শ’ শতকে অস্ট্রেলিয়ার সোনার খনির সময়কার একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
জানা যায়, ১৮৫৭ সালের জুন মাসে ৮০০ টনের এই পালতোলা জাহাজটি নেদারল্যান্ডসে ফেরার পথে ছিল। পথে এক ভয়াবহ ঝড়ে জাহাজটি রোব শহরের কাছে উল্টে যায়। এতে নাবিকদের দুই-তৃতীয়াংশ ডুবে যান।
এর কয়েকদিন আগেই ৪০০ চীনা শ্রমিক এই জাহাজ থেকে নেমেছিলেন। তারা ভিক্টোরিয়ার সোনার খনিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। জাহাজের নাবিকরা তাদের যাত্রী হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন বাড়তি টাকা আয়ের জন্য, যা তখন খুব একটা নিয়ম মেনে করা হতো না।
ওই দুর্ঘটনায় যেসব নাবিক মারা গিয়েছিলেন, তাদের মরদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা লং বিচের বালুর নিচে চাপা পড়ে বলে ধারণা করা হয়।
এই ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে প্রত্নতত্ত্ববিদদের তিন বছর সময় লেগেছে। অবশেষে চলতি বছরের ১০ মার্চ ডাচ সরকারের সহায়তায় একদল ডুবুরি জাহাজটি খুঁজে পান। জেমস হান্টার নামের একজন গবেষক প্রথম এটি পানির নিচে দেখেন। তিনি বলেন, ‘বালু সরে গিয়ে জাহাজের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। তখনই বুঝতে পারি, আমরা জাহাজটি খুঁজে পেয়েছি।’
প্রত্নতত্ত্ববিদেরা বিশ্বাস করেন, এটিই কনিং উইলেম দ্য টুয়েডে, কারণ এর অবস্থান ও আকার পুরোনো নথির সঙ্গে মিলে যায়। ২০২৩ সালে ওই জায়গার কাছে সৈকতে ১৯ শতকের চীনা মাটির বাসনের টুকরোও পাওয়া যায়।
এখন জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে জিনিসপত্র সংগ্রহ করে রাখা হবে, যাতে ১৯ শতকের জাহাজ, নাবিক ও যাত্রীদের জীবন সম্পর্কে আরও জানা যায়। এই কাজে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করছে।