English

21 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

১,৮০০ টাকা বেতনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ, সেই স্মৃতি হয়েছিলেন ভারতের মন্ত্রী

- Advertisements -

একসময় মাসে ১,৮০০ রুপি বেতনে ক্লিনারের কাজ করেছিলেন, সেই নারীই পরে হয়ে ওঠেন ভারতের টেলিভিশনের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া তারকা, এবং শেষ পর্যন্ত দেশের মন্ত্রী। বলছিলাম স্মৃতি ইরানির কথা। যার গল্প অনুপ্রেরণা জোগায় অসংখ্য মানুষকে।

ভারতের টেলিভিশন জগতের অন্যতম নাম স্মৃতি ইরানি।

১৯৭৬ সালে দিল্লিতে জন্ম নেওয়া স্মৃতি ছিলেন তিন বোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। বাবা ছিলেন আধা পাঞ্জাবি ও আধা মহারাষ্ট্রীয়, মা বাঙালি। পরিবারে অর্থাভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। বাবা আর্মি ক্লাবের বাইরে বই বিক্রি করতেন, আর মা সংসার চালাতে মসলা বিক্রি করতেন বাড়ি বাড়ি ঘুরে।
সীমিত আয়ের কারণে কলেজে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি স্মৃতির। সংসারের হাল ধরতে অল্প বয়সেই নানা ধরনের কাজ শুরু করতে হয় তাঁকে। তবে দেখতে শুনতে ভালো স্মৃতির আগ্রহ ছিল শোবিজ অঙ্গন নিয়ে। 
স্মৃতি প্রথম আলোচনায় আসেন মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
সেরা ১০ জনের তালিকায় জায়গা করলেও তার জন্য ধার করতে হয়েছিল এক লাখ রুপি। এরপর এয়ার হোস্টেস হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে—কারণ দেখানো হয়েছিল, তাঁর মধ্যে ‘প্রয়োজনীয় ব্যক্তিত্ব’ নেই। চাকরির খোঁজে তিনি ভারতের প্রথম ম্যাকডোনাল্ডসে যোগ দেন ক্লিনার হিসেবে, যেখানে মাসিক আয় ছিল মাত্র ১,৮০০ রুপি। বাসনও মাজতে হয়েছিল রেস্টুরেন্টে। 

তবে স্বপ্ন ছাড়েননি কখনো। একের পর এক অডিশন দিতে থাকেন অভিনয়ের জন্য। ‘হাম পাঁচ’–এর মতো জনপ্রিয় সিরিজেও সুযোগ মেলেনি। ঠিক তখনই ভাগ্য ঘুরে যায় এক বিশেষ মুহূর্তে। একতা কাপুরের মা তাঁকে দেখে বলেন—মেয়েটি টুইঙ্কেল খান্নার মতো সুন্দর। সেই মন্তব্যেই বদলে যায় স্মৃতির জীবন।

একতা কাপুর ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে ‘কিউকি সাস ভি কাভি বাহু থি’ ধারাবাহিকে সুযোগ দেন। সেখানেই জন্ম নেয় টেলিভিশনের ইতিহাস। ২০০০ সালে শুরু হওয়া সিরিজটি তিন মাসের মধ্যেই টিআরপি তালিকার শীর্ষে উঠে যায়। তুলসী বিরানি চরিত্রে অভিনয় করে স্মৃতি রাতারাতি ভারতের ঘরে ঘরে পরিচিত হয়ে ওঠেন। যেখানে মাসে ১,৮০০ রুপি রোজগার করতেন, সেখান থেকে দিনে ১,২০০ রুপি পারিশ্রমিক পাওয়া শুরু করেন তিনি। ক্রমে হয়ে ওঠেন টেলিভিশনের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী।

নিজের যাত্রাপথ সম্পর্কে স্মৃতি একবার বলেছিলেন, “আমাকে অনেক সময় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে গায়ের রং, রোগা শরীর কিংবা চেহারার জন্য। বলা হয়েছে আমি দেখতে ভালো নই। কিন্তু ভেতরে জানতাম, আমার অন্যরকম শক্তি আছে।”

অভিনয়ে সাফল্যের পর রাজনীতিতেও নিজের অবস্থান দৃঢ় করেন তিনি। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়েন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান। জনপ্রিয়তা, সংগ্রাম এবং অদম্য মনোবল তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছেও গ্রহণযোগ্য করে তোলে। বিগত কয়েক দশক ধরেই অভিনয় ও রাজনীতি- দুই অঙ্গনে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন স্মৃতি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/ljaj
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন