English

33.4 C
Dhaka
সোমবার, জুন ২৩, ২০২৫
- Advertisement -

অতীতের ভুল শোধরাতে মরিয়া জার্মানি

- Advertisements -

বেশিরভাগ সময় মানুষ সংকটে পড়লে তা থেকে উত্তরণে অতীতের ভুল সংশোধনের পথ খোঁজে। একই অবস্থা জার্মানিরও। ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় সংকটাপন্ন দেশটির শিল্প-বাণিজ্য। তাই মরিয়া হয়ে এখন জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কাটানোর উপায় খুঁজছে তারা।

জার্মানির প্রধান রাসায়নিক কোম্পানিগুলো অনেকটা ছোটখাটো শহরের মতো। সেখানে কোটি কোটি কিলোওয়াট/ঘণ্টা গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। জার্মানির জ্বালানি চাহিদা বিশাল হলেও এর আগে কখনো জোগান এতটা কমে যায়নি। অর্থাৎ, ইউক্রেন যুদ্ধের আগে জার্মানরা কখনোই জ্বালানি সংকটের তীব্রতা এভাবে অনুভব করেনি।

রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জার্মানির ইস্পাত কারখানা, ভারী শিল্প, যন্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। কারণ তাদের বিশাল জ্বালানির চাহিদা মেটানো এমনিতেই কঠিন। তার ওপর গ্যাস ও বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে শিল্পক্ষেত্র বড় সংকটের মুখে পড়েছে, বিশেষ করে রাসায়নিক খাত।

জার্মানির কেন্দ্রীয় রাসায়নিক শিল্প সংগঠনের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইয়োর্গ রোটারমেল বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাসের জন্য কখনো বিশাল দাম চাওয়া হচ্ছে। ডিটারজেন্ট থেকে শুরু করে ওষুধ, আঠা ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের এই বাড়তি ব্যয় ক্রেতাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না। আগামী বছর থেকে সব রাসায়নিক পণ্যের ক্ষেত্রেই এমন সমস্যা দেখা যেতে পারে।’

এতদিন বিএএসএফ নামে একটি জার্মান রাসায়নিক কোম্পানি তার গ্যাসের চাহিদার প্রায় অর্ধেকটাই মেটাতো রাশিয়া থেকে। ১৯৯০’র দশকের শুরুতে কোম্পানিটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা গ্যাজপ্রমের সঙ্গে লুডভিগ্সহাফেনে একটি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ করেছিল। পোল্যান্ডের ওপর দিয়ে জার্মানি পর্যন্ত বিস্তৃত ইয়ামাল পাইপলাইনে বিনিয়োগ করেছিল বিএএসএফ।

২০০৮ সাল থেকে তারা ‘নর্ড স্ট্রিম ১’ পাইপলাইন নির্মাণকাজেও অংশ নেয়। এর ফলে বেশ কম দামে রাশিয়া থেকে গ্যাস আনা সম্ভব হয়েছিল।

জার্মান অর্থনীতি গবেষণা কেন্দ্রের প্রেসিডেন্ট মার্সেল ফ্রাচারের মতে, ‘ক্রিমিয়া দখলের পরেও রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা বাড়ানো প্রথম ভুল ছিল। দ্বিতীয় ভুল হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ঢিলেমি। দক্ষতাসম্পন্ন ও সাশ্রয়ী প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও ১০ বছর ধরে জার্মানি সেই পথে এগোয়নি। এখন তার কুফল দেখতে হচ্ছে। অর্থাৎ, আমাদের ভুলই জার্মানিতে এমন গভীর সংকট ও অর্থনৈতিক কাঠামো বিপন্ন করে তোলার কারণ।’

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে বিদ্যুতের দাম বেশ চড়া। ফলে সেখানকার মাঝারি মাপের রপ্তানি-নির্ভর কোম্পানিগুলোর জন্য জ্বালানির উচ্চমূল্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর সাহায্য নিয়েই জার্মানি অতীতের সংকটগুলো কাটিয়ে উঠেছিল।

দেশ হিসেবেও জার্মানি বিশ্বায়নের ব্যাপক ফায়দা তুলেছে। কিন্তু সস্তা জ্বালানি না পাওয়ায় বিশ্ববাজারে জার্মান পণ্য অতিরিক্ত দামি হয়ে উঠছে। এর সমাধান কী?

আইএনজি ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কার্স্টেন ব্রজেস্কি বলেন, ‘জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি ত্যাগ করে বিকল্প জ্বালানি গ্রহণের প্রক্রিয়া অবশ্যই বর্তমান সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার ও ইতিবাচক কিছু করে দেখানোর বিশাল সুযোগ। শিল্পভিত্তিক দেশ, ইঞ্জিনিয়ারদের দেশ হিসেবে আবার নেতৃস্থানীয় ভূমিকা ফিরে পেতে সেই প্রক্রিয়া আমাদের সাহায্য করতে পারবে এবং অবশ্যই করবে। টেকসই পদ্ধতি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খুবই জরুরি।’

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/9pog
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন