শনিবার রাতভর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আফগানিস্তানের ১৯টি সীমান্ত পোস্ট দখলের দাবি করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানি সেনাসূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, শনিবার রাতভর সংঘাতে পাকিস্তান সেনবাহিনীর আক্রমণের মুখে সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের ডুরান মেলা, তুর্কমানজাই, শহিদান, কুনার, চাগাইসহ ১৯টি পোস্ট থেকে পালিয়েছে আফগান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
সংঘাতের সময় এসব পোস্টে কয়েক ডজন আফগান সেনা নিহত এবং আহত হয়েছেন। তাদেরকে ফেলে রেখেই কর্মকর্তা ও সদস্যরা পালিয়েছেন বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সেনবাহিনী।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, পাকিস্তান ও আফগান তালেবান বাহিনীর মধ্যে শনিবার রাতে সীমান্তজুড়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি জানিয়েছেন, আফগান বাহিনীর ‘উসকানিমূলক’ হামলার জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে ডন জানিয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনী আন্তর্জাতিক সীমান্তে আফগান বাহিনীর বেশ কয়েকটি পোস্টে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এতে আফগান পোস্ট ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ‘গুরুতর ক্ষতি’ হয়েছে বলে দাবি তাদের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলায় আর্টিলারি, ট্যাংক, হালকা ও ভারি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। আফগান বাহিনী খাইবার পাখতুনখোয়ার আঙ্গুরআড্ডা, বাজাউর, কুররাম, দির, চিত্রাল এবং বেলুচিস্তানের বারামচায় পাকিস্তানি পোস্টে গুলি চালায়।
কাবুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পাকিস্তান গত সপ্তাহে আফগান রাজধানীতে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবেই সীমান্তে লড়াই শুরু হয়েছে বলে দাবি তালেবান সীমান্তবাহিনীর।
তালেবান কর্মকর্তারা কুনার, নানগারহার, পাকতিকা, খোস্ত ও হেলমান্দ প্রদেশ থেকে সংঘর্ষের খবর নিশ্চিত করেছেন।
ইসলামাবাদ যদিও বিমান হামলার কথা অস্বীকার করেছে, তবে কাবুলকে সতর্ক করে বলেছে, “তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে নিজেদের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।”
এদিকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, “একাধিক আফগান সেনা নিহত হয়েছে’ এবং ‘তালেবান যোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।”
তারা আরও বলেছে, “দায়েশ ও খারেজি গোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলো, যেগুলো আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় চলছে, সেখানে আর্টিলারি, ট্যাংক, ড্রোন ও বিমান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।”
এদিকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে কাতার, ইরান, সৌদি আরবের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো।