ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গোর (ডিআরসি) ইটুরি প্রদেশের কোমান্ডা শহরে একটি গির্জায় হামলায় অন্তত ৩৮ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। রোববার ভোরে বন্দুক ও দা-সজ্জিত সন্দেহভাজন অ্যালাইড ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এডিএফ) সদস্যরা এই হামলা চালায়।
উগ্রবাদী সংগঠন আইএস-এর সঙ্গে সম্পর্কিত এডিএফ বিদ্রোহী গোষ্ঠী উগান্ডা ও ডিআরসি সীমান্তে সক্রিয় এবং দীর্ঘদিন ধরেই বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে।
হামলার সময় ক্যারিটাস চ্যারিটির পরিচালিত ক্যাথলিক গির্জায় প্রার্থনাসভা চলছিল। হামলাকারীরা কয়েকটি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয় এবং বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে মানবাধিকারকর্মী ক্রিস্টোফ মুয়ান্দেরু জানান, বিদ্রোহীরা মূলত ক্যাথলিক গির্জায় রাতযাপনরত খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে। দুঃখজনকভাবে, তাদের দা কিংবা গুলির মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।
ডিআরসি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জুলস নঙ্গো বলেন, আজ সকালে আমরা জেনেছি, কোমান্ডার কাছের একটি গির্জায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে আক্রমণ চালায়।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) এক স্থানীয় নাগরিক সমাজের নেতা জানান, গির্জার ভেতরে ও বাইরে গুলিবর্ষণ চালিয়ে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল থেকে অন্তত তিনটি দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
কোমান্ডার সিভিল সোসাইটি সমন্বয়ক ডিয়েডোনে দুরানথাবো জানান, লাশের খোঁজ এখনো চলছে। নিরাপত্তা বাহিনী উপস্থিত থাকার পরও এতজন মারা গেলেন, তা আমাদের গভীরভাবে হতাশ করেছে।
তিনি আরও জানান, অনেকেই ওই এলাকা ছেড়ে বুনিয়া শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।
১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে উগান্ডায় ছোট ছোট গোষ্ঠীর মিলিত প্রচেষ্টায় গঠিত হয় এডিএফ। ২০০২ সালে উগান্ডার সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে তারা কার্যক্রম ডিআরসি-তে স্থানান্তর করে এবং তারপর থেকেই হাজার হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে। ২০১৯ সালে আইএস-র প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তারা।
গোষ্ঠীটির নেতারা দাবি করেছেন, তারা পূর্ব আফ্রিকায় একটি চরমপন্থি সরকার গঠনের জন্য লড়ছে।
ডিআরসি সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই এডিএফ-এর বিরুদ্ধে লড়ছে, তবে বর্তমানে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীদের সাথে নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।