কম্বোডিয়ার সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক থাই নাগরিক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। তিনি ৩০ কিলোমিটার পথ হেঁটে কম্বোডিয়া দূতাবাসের সামনে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট নেতা হুন সেনের একটি প্রতিকৃতিতে থাইল্যান্ডের বিখ্যাত পচা মাছের চাটনি ‘নাম প্লা রা’ মাখিয়ে দেন।
৬৯ বছর বয়সী সাবেক টেনিস কোচ থেওয়া স্রিতাওয়ান সোমবার ভোরে থাইল্যান্ডের ননথাবুরি প্রদেশের পাক ক্রেত এলাকা থেকে খালি পায়ে যাত্রা শুরু করেন। ভোর ৬টায় বের হয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা হাঁটার পর এক পর্যায়ে মোটরবাইক ট্যাক্সিতে উঠে ব্যাংককের প্রাচা উৎহিত সড়কে অবস্থিত কম্বোডিয়া দূতাবাসে পৌঁছান তিনি।
পরে দূতাবাসের সামনের ফুটপাথে হুন সেনের প্রতিকৃতি রেখে তাতে ঢেলে দেন নাম প্লা রা, যা থাই রান্নায় ব্যবহৃত একধরনের পচা মাছের সস। এতে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে তাকে আটক করে এবং পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে থেওয়া জানান, ‘আমি হুন সেনের আগ্রাসী আচরণের প্রতিবাদ করতে এসেছি। সীমান্ত নিয়ে কম্বোডিয়ার নীতিতে আমি ক্ষুব্ধ।’ তিনি আরও জানান, এর আগেও তিনি ১০ দিন হেঁটে সীমান্তে গিয়েছিলেন থাই সেনাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে।
ঘটনাস্থলে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম তিনি হয়তো পথকুকুরদের খাবার দিচ্ছেন। পরে গন্ধে বুঝি, ভিন্ন কিছু হচ্ছে।’
দূতাবাস অভিযোগ না করায় থাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। ‘লিটারিং’ বা পাবলিক স্থানে আবর্জনা ছড়ানোর অভিযোগে তাকে ১০০ বাথ (প্রায় ৩ মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পরও থেওয়া বলেন, ‘আমি প্রতিবাদ চালিয়ে যাব। শুধু কম্বোডিয়া নয়, কোনো থাই সরকারি সংস্থা যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তখনও আমি ফিরে আসব—নাম প্লা রা নিয়ে।’
২০২৩ সালের জুলাই মাসেও তিনি ব্যাংককের চেং ওয়াট্থানা রোডে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে একইভাবে প্রতিবাদ জানান।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা সম্প্রতি বাড়ছে। মে মাসে ‘এমারাল্ড ট্রায়াঙ্গেল’ নামে পরিচিত এক বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলিতে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হয়। ওই এলাকা কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড ও লাওস—তিন দেশের সীমান্তে অবস্থিত।