English

26.2 C
Dhaka
শনিবার, জুলাই ৫, ২০২৫
- Advertisement -

করোনার টিকার কারণে আকস্মিক মৃত্যু বাড়ছে? ভারতে গবেষণা যা বলছে

- Advertisements -

সাম্প্রতিককালে ভারতে বেশ কয়েকজন খ্যাতনামা ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে, মহামারি-পরবর্তী সময়ে প্রাপ্তবয়স্কদের আকস্মিক মৃত্যুর সঙ্গে কি কোনোভাবে করোনার টিকার যোগসূত্র রয়েছে? সম্প্রতি কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াও আবার সেই প্রশ্ন উসকে দিয়েছেন। সেই আবহে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল (আইসিএমআর) ও অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস) যৌথ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনার টিকা নেওয়ার সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনো যোগসূত্র নেই। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গণমাধ্যমটির তথ্য অনুসারে, গত এক মাসে কর্ণাটকের হাসন জেলায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।

তা নিয়ে সিদ্দারামাইয়া দাবি করেছিলেন, মহামারিকালে করোনার টিকা নিয়ে অনেক তাড়াহুড়া করা হয়েছিল। তরুণ-তরুণীদের আকস্মিক মৃত্যুর সঙ্গে এর যোগসূত্র থাকতেই পারে। এর পরই করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য কমিটি তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মহামারির পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে খবরে দেখা গিয়েছে, করোনার টিকা নেওয়া অনেকেই আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, যাদের অনেকেই কম বয়সী।

করোনার টিকা নেওয়ার কারণে তারা মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন মহলে। গায়ক কেকে, অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা ও সম্প্রতি অভিনেত্রী শেফালী জারিওয়ালার মৃত্যুতেও করোনার টিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে—এ রকম কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান নেই।

এই বিতর্কের আবহে বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আকস্মিক ও আকস্মিক মৃত্যুর সঙ্গে করোনার টিকার যোগসূত্র নিয়ে যে দাবি করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুল এবং এটি বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

বৈজ্ঞানিক গবেষণার সঙ্গেও বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

কেন্দ্রীয় সরকার আরো জানিয়েছে, ১৮-৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে যাদের আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে, তাদের কেন এমন পরিস্থিতি হলো, তা নিয়ে কাজ করেছে আইসিএমআর ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি)। ২০২৩ সালের মে থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে দেশের ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। যারা শারীরিকভাবে সুস্থই ছিলেন, কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে হঠাৎ মারা গিয়েছেন, মূলত তাদের প্রতিবেদন খতিয়ে দেখেই গবেষণা চালানো হয়েছিল। পরে আইসিএমআর ও এইমসও একই বিষয় নিয়ে একটি গবেষণা চালায়।

দুই গবেষণার প্রতিবেদনেই দেখা গিয়েছে, করোনা টিকার সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের আকস্মিক মৃত্যুর কোনো যোগসূত্র নেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা মারা গিয়েছেন, তাদের সম্পর্কে নানা তথ্য নেওয়া হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, টিকা নেওয়া বা টিকা না নেওয়া—দুই ধরনের রোগীরই মৃত্যুর কারণ দুর্বল হৃৎপিণ্ড, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ধমনীতে রক্ত চলাচলে সমস্যার কারণে হৃৎপিণ্ডে যথেষ্ট রক্ত না পৌঁছনো, হৃৎপিণ্ডে পেশির দুর্বলতার কারণে সারা শরীরে রক্ত পৌঁছতে না পারা।

এ-ও বলা হয়েছে, যাদের হৃৎপিণ্ডে এ ধরনের সমস্যা ছিল, তাদের ক্ষেত্রে ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান, বিশেষ করে সারা রাত জেগে অত্যধিক মদ্যপান আচমকা মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। তেমনই দুর্বল হৃৎপিণ্ড যাদের, তাদের ক্ষেত্রে অজান্তেই অতিরিক্ত ব্যায়াম, নাচ, মানসিক উত্তেজনা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

এ ছাড়া যাদের পারিবারিকভাবে দুর্বল হৃৎপিণ্ডের সমস্যা রয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে তাদের আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। পাশাপাশি যারা ধূমপান ও সারা রাত ধরে মদ্যপান করেন, তাদের আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে যথাক্রমে দুই ও ছয় গুণ। একই সঙ্গে দুর্বল হৃৎপিণ্ড যাদের, তাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

গবেষণার কাজে যুক্ত থাকা এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘প্রতিষেধক বর্ম হিসেবে কাজ করে। প্রতিষেধকের সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।’

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/rj4w
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন