তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-এর শীর্ষ নেতা ও ইস্তান্বুলের মেয়র একরেম ইমামওলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৪২টি অভিযোগ এনেছে দেশটির প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে দুই হাজার বছরেরও বেশি কারাদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।
যদিও তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমামওলু।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বুধবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানায়, ইমামওলুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি তহবিলের অপব্যবহার, অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ।
একরেম ইমামওলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৪২টি অভিযোগ এনেছেন দেশটির প্রধান প্রসিকিউটর। বিবিসি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইমামওলুর সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৫২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
ইমামওলু বর্তমানে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত। গত মার্চ থেকে তিনি দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক-বিচারিক আটক অবস্থায় রয়েছেন।
বিরোধী দল সিএইচপি অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে। তাদের মতে, এরদোগানের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় সরকার রাজনৈতিক প্রতিশোধের অংশ হিসেবে এই মামলা দায়ের করেছে।
তবে ইস্তান্বুলের প্রধান প্রসিকিউটর শুধু ইমামওলুকে নয় আরও ৪০১ জনকে অভিযুক্ত করেছেন। প্রসিকিউটর আকিন গুরলেক বলেন, আট মাসের তদন্তে দেখা গেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে ১০৫ জন ইতোমধ্যে আটক রয়েছেন। তারা ঘুষ নেওয়া, অর্থ পাচার এবং অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে ১৬০ বিলিয়ন লিরা (প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি করেছেন।
৫৪ বছর বয়সী ইমামওলুর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ১২টি, অর্থপাচারের ৭টি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জালিয়াতির আরও ৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে। আনাদোলু সংবাদ সংস্থার হিসাবে, এসব অভিযোগে তার কারাদণ্ডের মেয়াদ দাঁড়াতে পারে ২ হাজার ৪৩০ বছর পর্যন্ত।
গত মার্চে ইমামওলুর গ্রেপ্তারের পর তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। শত শত মানুষকে সেসময় আটক করা হয় এবং পুলিশের দমন অভিযান চলে। এরপর থেকে তিনি ইস্তান্বুলের মারমারা কারাগারে আটক আছেন।
দুর্নীতি মামলার পাশাপাশি ইমামওলুর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি, জাল সনদ ব্যবহারসহ আরও কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বাতিলও করা হয়েছে। ফলে, আইন অনুযায়ী, তিনি ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
ইমামওলু ২০১৯ সালে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হন এবং ২০২৪ সালের এপ্রিলে দ্বিতীয়বার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন একে পার্টির প্রার্থীকে প্রায় দশ লাখ ভোটে পরাজিত করেন।
