প্রাচীন মিশরীয় একটি সমাধিতে নৈবেদ্য (দেবতার উদ্দেশে নিবেদনীয় দ্রব্য) হিসেবে ব্যবহৃত মাটির মডেলে চার হাজার বছরের পুরনো হাতের ছাপ আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা।
যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিটজউইলিয়াম জাদুঘরের গবেষকরা উদ্বোধন হতে যাওয়া একটি প্রদর্শনীর প্রস্তুতির সময় এই ছাপটি আবিষ্কার করেন।
জাদুঘরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি একটি আত্মার ঘর। যা সাধারণত সমাধিস্থলে পাওয়া যায় এবং বলা হয় যে এটি আত্মার বসবাসের জন্য একটি জায়গা প্রদান করেছে।
সিএনএন এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মডেলটির সামনে একটি খোলা জায়গা আছে যেখানে রুটি, লেটুস বা ষাঁড়ের মাথার মতো খাদ্য নৈবেদ্য (দেবতার উদ্দেশে নিবেদনীয় দ্রব্য) রাখা হতে পারে।
ঘরটি ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় যে, এটি চার সহস্রাব্দ আগে তৈরি হয়েছিল।
এতে দেখা গেছে, নামহীন নির্মাতা প্রথমে দোতলা ভবনের জন্য কাঠের একটি কাঠামো তৈরি করেছিলেন, যা পরে মাটি দিয়ে লেপা হয়েছিল। আগুন লাগানোর প্রক্রিয়ায় কাঠ পুড়ে যেত।
হাতের ছাপটি সোল হাউসের নীচে পাওয়া গেছে এবং সম্ভবত মাটি ভেজা থাকা অবস্থায় এবং ভাটিতে পোড়ানোর আগে কুমার যখন মডেলটি সরিয়েছিলেন তখন ছাপটি তৈরি হয়েছিল।
জাদুঘরের সিনিয়র মিশরবিদ এবং প্রদর্শনীর কিউরেটর হেলেন স্ট্রুডউইক বলেন, ‘আমরা ভেজা বার্নিশ বা সাজসজ্জার কফিনে আঙুলের ছাপের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি, তবে এই সোল হাউসের নীচে একটি সম্পূর্ণ হাতের ছাপ পাওয়া বিরল এবং উত্তেজনাপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এটি সেই নির্মাতা রেখে গিয়েছিলেন যিনি মাটি শুকানোর আগে এটি স্পর্শ করেছিলেন। আমি এর আগে কখনো কোনো মিশরীয় বস্তুতে এত সম্পূর্ণ হাতের ছাপ দেখিনি। আপনি কল্পনা করতে পারেন যে যিনি এটি তৈরি করেছেন, তিনি আগুন লাগানোর আগে এটিকে ওয়ার্কশপ থেকে শুকানোর জন্য তুলে নিচ্ছেন।’
স্ট্রুডউইক আরও যোগ করেন, ‘এই ধরণের জিনিসগুলি আপনাকে সরাসরি সেই মুহূর্তে নিয়ে যায়, যখন বস্তুটি তৈরি করা হয়েছিল এবং যিনি এটি তৈরি করেছিলেন তার কাছে।’
প্রাচীন মিশরীয় আমলের প্রচুর পরিমাণে মৃৎশিল্প এখনো টিকে আছে। কারণ সিরামিকগুলি কার্যকরী বস্তু এবং সাজসজ্জার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত। সমাধিতে খাদ্য ও পানীয় ধারণকারী মৃৎশিল্পের ব্যবহার তখন ছিল সাধারণ বিষয়।