বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি জব্দ অভিযানের ঘটনায় এক চীনা নারীকে দোষী সাব্যস্ত করেছে যুক্তরাজ্যের আদালত।
ব্রিটিশ মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, তারা ৬১ হাজার বিটকয়েন উদ্ধার করেছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য পাঁচ বিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি (৬৭০ কোটি মার্কিন ডলার)।
৪৭ বছর বয়সি ঝিমিন কিয়ান (অন্য নামে ইয়াদি ঝাং) সোমবার সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্টে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বিটকয়েন অর্জন ও রাখার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন।
২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কিয়ান চীনে একটি বৃহৎ প্রতারণা চক্র পরিচালনা করেন, যেখানে প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার মানুষকে ঠকানো হয়। প্রতারণার অর্থ তিনি বিটকয়েনে রূপান্তর করে লুকিয়ে রাখেন।
পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাত বছরের আন্তর্জাতিক তদন্ত শেষে এই রায় এলো। তদন্ত শুরু হয়েছিল একটি টিপঅফ থেকে, যেখানে অপরাধী সম্পদের স্থানান্তরের তথ্য পাওয়া গিয়েছিল।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিটেকটিভ সার্জেন্ট ইসাবেলা গ্রোট্টো জানান, কিয়ান পাঁচ বছর ধরে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে চীন থেকে পালিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্যে আসার পর চুরি করা অর্থ দিয়ে সম্পত্তি কিনে অর্থপাচারের চেষ্টা করেন।
কিয়ানের আইনজীবী রজার সাহোটা বলেন, আজ দোষ স্বীকারের মাধ্যমে ঝাং আশা করছেন প্রতারিত বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সান্ত্বনা পাবেন। ২০১৭ সাল থেকে যারা ক্ষতিপূরণের অপেক্ষায় আছেন, তারা নিশ্চিত হতে পারেন যে ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে।
তবে যুক্তরাজ্য সরকার এই বিপুল জব্দ অর্থ নিজেদের কাছে রাখবে কি না—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্রিটিশ ট্রেজারি ও হোম অফিসের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগের কনজারভেটিভ সরকার অপরাধ সংক্রান্ত আইন সংস্কার করে যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষকে ক্রিপ্টো সম্পদ জব্দ, ফ্রিজ ও পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া সহজ করেছে। এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদেরও তাদের আটকে থাকা সম্পদ ফেরতের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।