আল জাজিরার রিপোর্টার আনাস আল শরীফ। যারা নিয়মিত গাজা পরিস্থিতির খবর রাখেন, তারা অনেকেই তাকে চেনেন।নিয়মিত ক্যামেরার সামনে এসে এই সাহসী সাংবাদিক রিপোর্ট করতেন। গতকাল রবিবার আল শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয় মোট সাতজন। যার মধ্যে পাঁচজন ছিল আল জাজিরার সাংবাদিক।ছিলেন আনাস আল শরীফও।
২৮ বছর বয়সী আনাস ছিলেন আল-জাজিরা আরবির পরিচিত মুখ। তিনি গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন করছিলেন। গত ৬ এপ্রিল শরীফ একটি ‘শেষ বার্তা’ লেখেন। মৃত্যুর পর প্রকাশের জন্য এই বার্তা রেখে গিয়েছিলেন তিনি।
সেখানে আনাস বলেন, যন্ত্রণার প্রতিটি ক্ষুদ্রতম রূপ অনুভব করেছেন। বারবার দুঃখ ও ক্ষতির স্বাদ পেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘তবু আমি কখনো দ্বিধা করিনি সত্য যেমন আছে, ঠিক তেমনই, বিন্দুমাত্র বিকৃতি বা ভ্রান্তি ছাড়াই তুলে ধরতে। আমার একমাত্র আশা ছিল, আল্লাহ যেন সাক্ষী থাকেন তাদের প্রতি, যারা নীরব থেকেছেন, যারা আমাদের হত্যাকে মেনে নিয়েছেন, আর যারা আমাদের শ্বাস পর্যন্ত রুদ্ধ করেছেন।’
শরীফ লিখেছেন, ‘আমাদের শিশু ও নারীদের ক্ষতবিক্ষত দেহও তাদের হৃদয়কে নড়াতে পারেনি, কিংবা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের জনগণের ওপর চলা হত্যাযজ্ঞ থামাতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, স্ত্রী বায়ান, ছেলে সালাহ ও মেয়ে শামকে রেখে হয়তো তার চলে যেতে হতে পারে। ছেলে-মেয়ের বড় হওয়াটা হয়তো তিনি দেখে নাও যেতে পারেন। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
বার্তার শেষে আনাস লেখেন, ‘আমি যদি মারা যাই, তারপরও আমি আমার আদর্শে অটল থাকব। আল্লাহর সঙ্গে আমার দেখা হচ্ছে। তিনি চিরস্থায়ী। আপনার গাজাকে ভুলে যাবেন না, আর আপনাদের প্রার্থনায় আমাকে ভুলে যাবেন না।’