শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা নদীর ভাঙনে একটি দুই তলা মসজিদ তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট এলাকার আলম খাঁর কান্দি জামে মসজিদটি তলিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ‘আজ সকালেই খবর পেয়েছি আমাদের এলাকার মসজিদটি ভাঙনের কবলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা অনেকেই দ্রুত নদীর পাড়ে চলে আসি। একটু পরেই চোখের পলকে বিকট শব্দে মসজিদটি নদীর মধ্যে ভেঙে পড়ে। আমরা এলাকাবাসী খুবই আতঙ্কে আছি। আমাদের অনেকের ঘরবাড়ি চলে গেছে, বাকিগুলোও চলে যাবে।’
স্থানীয় অনেকেই বলেন, ‘জিওব্যাগ ডাম্পিং করেও কোনোভাবেই নদী ভাঙন থামানো যাচ্ছে না। জানি না কবে এই ভাঙন থামবে। তবে অতি দ্রুত স্থায়ী টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গত বছর নভেম্বর মাসে জাজিরার পদ্মাসেতু প্রকল্পের ইন্সট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষাবাঁধের জিরোপয়েন্ট এলাকায় প্রথম ভাঙন শুরু হয়। এতে বাঁধের ১০০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর চলতি বছরের ৭ জুন, ৭ জুলাই, ৯ জুলাই, ২৩ জুলাই, ৩১ জুলাই ও সবশেষ ৫ আগস্ট মোট কয়েক দফা ভাঙনে বাঁধটির অন্তত ৭৫০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
ভাঙনে ওই বাঁধের পাশে আলম খাঁরকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি এবং মাঝির ঘাট এলাকার অন্তত ৩০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৫০টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙন আতঙ্কেশতাধিক ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয় স্থানীয়রা।
এদিকে ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই অঞ্চলের অন্তত ৬০০ পরিবার এবং মাঝিরঘাট বাজারের ২০০টির বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে অস্থায়ী ভিত্তিতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও জিওটিউব ডাম্পিং করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ পর্যন্ত ওই এলাকায় ১ লাখ ২০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। তবে ভাঙনের ফলে সেগুলোও কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু সেই জিওব্যাগ সমেত নদীর তীর ভেঙে আরও ১৫০ মিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ তারেক হাসান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত নদী ভাঙন ঠেকাতে আপদকালীন কাজ করছি। কিন্তু পদ্মা নদীতে যেই স্রোত, ভাঙন পুরোপুরি থামানো সম্ভব না। ভাঙন প্রতিরোধের একটি ব্যবস্থা, সেটি হলো স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আমরা ইতোমধ্যেই সে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন শেষে আমরা কাজ শুরু করতে পারব।’