ঘরের পরিবেশ : ঘর শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে। শিশুর ঘর যেন স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে। ঘরে যাতে নিয়মিত আলো-বাতাস প্রবেশ করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র থাকলেও ঘর খুব বেশি ঠাণ্ডা করবেন না। ঘরে-বাইরে তাপমাত্রার পার্থক্য খুব বেশি হলে শিশুর সহজেই ঠাণ্ডা লেগে যাবে। রাতের শেষ দিকে এমনিতেই তাপমাত্রা কমে যায়। এ সময় কৃত্রিমভাবে তাপমাত্রা কমানোর প্রয়োজন হয় না। যাদের অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট থাকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র তাদের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই শুষ্কতা এড়াতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্রে একটি পানির পাত্র রাখতে পারেন বা হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। তবে বদ্ধঘরের চেয়ে খোলামেলা, উন্মুক্ত পরিবেশ শিশুর জন্য বেশি ভালো।
ত্বকের যত্ন : শিশুর ত্বকের সমস্যা এড়াতে নখ নিয়মিত ছোট রাখুন। পাশাপাশি দীর্ঘ সময় শিশুকে ডায়াপার ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখুন।
মশারি ব্যবহার : দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করুন। বর্ষায় মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই শিশুকে ঘরে ও ঘরের বাইরে মশা থেকে সুরক্ষিত রাখতে মাথা, গলা, হাত-পা পোশাকে ঢেকে রাখুন। ঘুমের সময় মশারি ব্যবহার করুন।
পোশাক : সহজেই অপরিষ্কার হয়ে যায় বলে শিশুদের পোশাক একটু বেশি লাগে। বর্ষার সময় কাপড় শুকাতেও অসুবিধা হয়। শিশুকে পরিচ্ছন্ন পোশাক পরানোর জন্য তাই কয়েক সেট বাড়তি পোশাক রাখা ভালো। এ সময় শিশুর জন্য সুতির হালকা, নরম ও আরামদায়ক পোশাক ভালো। বয়স অনুযায়ী পোশাক বেছে নিন। নবজাতকের জন্য হাতকাটা জামা ভালো। কারণ জামার ভাঁজে ঘাম জমে র্যাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। হামাগুড়ি দিচ্ছেÑ এমন শিশুর জন্য চাই একছাঁটের পোশাক। খেয়াল রাখুন, জামাটা হাঁটুর ওপরেই যেন থাকে। হাঁটু বা হাঁটুর নিচ পর্যন্ত জামার ঝুল হলে চলতে গিয়ে বাধা পেতে পারে। প্রি-স্কুল শিশুর জন্য এমন পোশাক বেছে নিন, যা নিজেরাই পরতে ও বদলাতে পারে। চেইন বা হুক দেওয়া পোশাক ওদের জন্য ভালো নয়। ইলাস্টিকযুক্ত প্যান্ট দিতে পারেন। শিশুকে কোনো অবস্থায়ই ভেজা কাপড় পরানো যাবে না। সব বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে ভারী জিনস প্যান্ট ও ভারী গ্যাবার্ডিনের পোশাক এ সময় এড়িয়ে চলুন। তবে প্রি-স্কুল বয়স থেকে শুরু করে আরেকটু বেশি বয়সী শিশুকে হালকা ওজনের গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট বা পাতলা জিনস পরানো যেতে পারে। সাধারণত পাতলা সুতির কাপড় এক দিন পরই শুকিয়ে যায়। খুব প্রয়োজন হলে হালকা ভেজা কাপড় ইস্ত্রি করে নিতে পারেন, তা হলে ভেজা ভাবটা আর থাকবে না।
খেলাধুলা : ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি বা হাঁটা, খেলাধুলা করার অভ্যাস বজায় রাখুন। শিশুর অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমে যেন ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর দিন।
ডাক্তারের পরামর্শ : প্রতিরোধ ব্যবস্থাই শেষ কথা নয়। শিশু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ; আলোক মাদার এন্ড
চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬, ঢাকা। হটলাইন : ১০৬৭২